এক দিন গরজিয়া কহিল মহিষ, ঘোড়ার মতন মোর থাকিবে সহিস। একেবারে ছাড়িয়াছি মহিষি-চলন, দুই বেলা চাই মোর দলন-মলন। এই ভাবে প্রতিদিন, রজনী পোহালে, বিপরীত দাপাদাপি করে সে গোহালে। প্রভু কহে,চাই বটে! ভালো, তাই হোক! পশ্চাতে রাখিল তার দশ জন লোক। দুটো দিন না যাইতে কেঁদে কয় মোষ, আর কাজ নেই প্রভু, হয়েছে সন্তোষ। সহিসের হাত হতে দাও অব্যাহতি, দলন-মলনটার বাড়াবাড়ি অতি।
জানি গো দিন যাবে। এ দিন যাবে। একদা কোন্ বেলাশেষে মলিন রবি করুণ হেসে শেষ বিদায়ের চাওয়া আমার মুখের পানে চাবে। পথের ধারে বাজবে বেণু, নাদীর কূলে চরবে ধেনু, আঙিনাতে খেলবে শিশু, পাখিরা গান গাবে। তবুও দিন যাবে এ দিন যাবে। তোমার কাছে আমার এ মিনতি। যাবার আগে জানি যেন আমায় ডেকেছিল কেন আকাশপানে নয়ন তুলে শ্যামল বসুমতী? কেন নিশার নীরবতা শুনিয়েছিল তারার কথা, পরানে ঢেউ তুলেছিল কেন দিনের জ্যোতি? তোমার কাছে আমার এই মিনতি। সাঙ্গ যবে হবে ধরার পালা যেন আমার গানের শেষে থামতে পারি সমে এসে, ছয়টি ঋতুর ফুলে ফুলে ভরতে পারি ডালা। এই জীবনের আলোকেতে পারি তোমায় দেখে যেতে, পরিয়ে যেতে পারি তোমায় আমার গলার মালা সাঙ্গ যবে হবে ধরার পালা।