যেদিন ফুটল কমল কিছুই জানি নাই আমি ছিলেম অন্যমনে। আমার সাজিয়ে সাজি তারে আনি নাই সে যে রইল সংগোপনে। মাঝে মাঝে হিয়া আকুলপ্রায়, স্বপন দেখে চমকে উঠে চায়, মন্দ মধুর গন্ধ আসে হায় কোথায় দখিন-সমীরণে। ওগো সেই সুগন্ধে ফিরায়ে উদাসিয়া আমায় দেশে দেশান্তে যেন সন্ধানে তার উঠে নিশ্বাসিয়া ভুবন নবীন বসন্তে। কে জানিত দূরে তো নেই সে, আমারি গো আমারি সেই যে, এ মাধুরী ফুটেছে হায় রে আমার হৃদয়-উপবনে।
আমার ঘরেতে আর নাই সে যে নাই-- যাই আর ফিরে আসি, খুঁজিয়া না পাই। আমার ঘরেতে নাথ, এইটুকু স্থান-- সেথা হতে যা হারায় মেলে না সন্ধান। অনন্ত তোমার গৃহ, বিশ্বময় ধাম, হে নাথ, খুঁজিতে তারে সেথা আসিলাম। দাঁড়ালেম তব সন্ধ্যা-গগনের তলে, চাহিলাম তোমা-পানে নয়নের জলে। কোনো মুখ, কোনো সুখ, আশাতৃষা কোনো যেথা হতে হারাইতে পারে না কখনো, সেথায় এনেছি মোর পীড়িত এ হিয়া-- দাও তারে, দাও তারে, দাও ডুবাইয়া। ঘরে মোর নাহি আর যে অমৃতরস বিশ্ব-মাঝে পাই সেই হারানো পরশ।