এ ধূসর জীবনের গোধূলি, ক্ষীণ তার উদাসীন স্মৃতি, মুছে-আসা সেই ম্লান ছবিতে রঙ দেয় গুঞ্জনগীতি। ফাগুনের চম্পক পরাগে সেই রঙ জাগে, ঘুমভাঙা কোকিলের কূজনে সেই রঙ লাগে, সেই রঙ পিয়ালের ছায়াতে ঢেলে দেয় পূর্ণিমাতিথি। এই ছবি ভৈরবী-আলাপে দোলে মোর কম্পিত বক্ষে, সেই ছবি সেতারের প্রলাপে মরীচিকা এনে দেয় চক্ষে, বুকের লালিম-রঙে রাঙানো সেই ছবি স্বপ্নের অভ্রতথি।
তোমার দুয়ার খোলার ধ্বনি ওই গো বাজে হৃদয়-মাঝে। তোমার ঘরে নিশিভোরে আগল যদি গেল সরে আমার ঘরে রইব তবে কিসের লাজে। অনেক বলা বলেছি, সে মিথ্যা বলা। অনেক চলা চলেছি,সে মিথ্যা চলা। আজ যেন সব পথের শেষে তোমার দ্বারে দাঁড়াই এসে, ভুলিয়ে যেন নেয় না মোরে আপন কাজে।
কালকে রাতে মেঘের গরজনে রিমিঝিমি-বাদল-বরিষনে ভাবিতেছিলাম একা একা-- স্বপ্ন যদি যায় রে দেখা আসে যেন তাহার মূর্তি ধ'রে বাদলা রাতে আধেক ঘুমঘোরে। মাঠে মাঠে বাতাস ফিরে মাতি, বৃথা স্বপ্নে কাটল সারা রাতি। হায় রে, সত্য কঠিন ভারী, ইচ্ছামত গড়তে নারি-- স্বপ্ন সেও চলে আপন মতে, আমি চলি আমার শূন্য পথে। কালকে ছিল এমন ঘন রাত, আকুল ধারে এমন বারিপাত, মিথ্যা যদি মধুর রূপে আসত কাছে চুপে চুপে তাহা হলে কাহার হত ক্ষতি স্বপ্ন যদি ধরত সে মূরতি?