শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে পড়ুক ঝরে তোমারি সুরটি আমার মুখের 'পরে বুকের 'পরে। পুরবের আলোর সাথে পড়ুক প্রাতে দুই নয়ানে- নিশীথের অন্ধকারে গভীর ধারে পড়ুক প্রাণে, নিশিদিন এই জীবনের সুখের 'পরে দুঃখের 'পরে শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে পড়ুক ঝরে। যে শাখায় ফুল ফোটে না ফল ধরে না একেবারে তোমার ওই বাদল-বায়ে দিক জাগায়ে সেই শাখারে। যা-কিছু জীর্ণ আমার দীর্ণ আমার জীবনহারা তাহারি স্তরে স্তরে পড়ুক ঝরে সুরের ধারা। নিশিদিন এই জীবনের তৃষার 'পরে ভুখের 'পরে শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে পড়ুক ঝরে।
আজ পুরবে প্রথম নয়ন মেলিতে হেরিনু অরুণশিখা-- হেরিনু কমলবরন শিখা, তখনি হাসিয়া প্রভাততপন দিলেম আমারে টিকা-- আমার হৃদয়ে জ্যোতির টিকা। কে যেন আমার নয়ননিমেষে রাখিল পরশমণি, যে দিকে তাকাই সোনা করে দেয় দৃষ্টির পরশনি। অন্তর হতে বাহিরে সকলি আলোকে হইল মিশা, নয়ন আমার হৃদয় আমার কোথাও না পায় দিশা। আজ যেমনি নয়ন তুলিয়া চাহিনু কমলবরন শিখা-- আমার অন্তরে দিল টিকা। ভাবিয়াছি মনে দিব না মুছিতে এ পরশ-রেখা দিব না ঘুচিতে, সন্ধ্যার পানে নিয়ে যাব বহি নবপ্রভাতের লিখা-- উদয়রবির টিকা।