দামিনীর আঁখি কিবা ধরে জ্বল' জ্বল' বিভা কার তরে জ্বলিতেছে কেবা তাহা জানিবে? চারি দিকে খর ধার বাণ ছুটিতেছে তার কার-'পরে লক্ষ্য তার কেবা অনুমানিবে? তার চেয়ে নলিনীর আঁখিপানে চাহিতে কত ভালো লাগে তাহা কে পারিবে কহিতে? সদা তার আঁখি দুটি নিচু পাতে আছে ফুটি, সে আঁখি দেখে নি কেহ উঁচু পানে তুলিতে! যদি বা সে ভুলে কভু চায় কারো আননে, সহসা লাগিয়া জ্যোতি সে-জন বিস্ময়ে অতি চমকিয়া উঠে যেন স্বরগের কিরণে! ও আমার নলিনী লো, লাজমাখা নলিনী, অনেকেরি আঁখি-'পরে সৌন্দর্য বিরাজ করে, তোর আঁখি-'পরে প্রেম নলিনী লো নলিনী! দামিনীর দেহে রয় বসন কনকময় সে বসন অপসরী সৃজিয়াছে যতনে, যে গঠন যেই স্থান প্রকৃতি করেছে দান সে-সকল ফেলিয়াছে ঢাকিয়া সে বসনে। নলিনী বসন পানে দেখ দেখি চাহিয়া তার চেয়ে কত ভালো কে পারিবে কহিয়া? শিথিল অঞ্চল তার ওই দেখো চারি ধার স্বাধীন বায়ুর মতো উড়িতেছে বিমানে, যেথা যে গঠন আছে পূর্ণ ভাবে বিকাশিছে যেখানে যা উঁচু নিচু প্রকৃতির বিধানে! ও আমার নলিনী লো, সুকোমলা নলিনী মধুর রূপের ভাস তাই প্রকৃতির বাস, সেই বাস তোর দেহে নলিনী লো নলিনী! দামিনীর মুখ-আগে সদা রসিকতা জাগে, চারি ধারে জ্বলিতেছে খরধার বাণ সে, কিন্তু কে বলিতে পারে শুধু সে কি ধাঁধিবারে, নহে তা কি খর ধারে বিঁধিবারি মানসে? কিন্তু নলিনীর মনে মাথা রাখি সঙ্গোপনে ঘুমায়ে রয়েছে কিবা প্রণয়ের দেবতা। সুকোমল সে শয্যার অতি যা কঠিন ধার দলিত গোলাপ তাও আর কিছু নহে তা! ও আমার নলিনী লো, বিনয়িনী নলিনী রসিকতা তীব্র অতি নাই তার এত জ্যোতি তোমার নয়নে যত নলিনী লো নলিনী।
THE NIGHT is dark and your slumber is deep in the hush of my being. Wake, 0 Pain of Love, for I know not how to open the door, and I stand outside. The hours wait, the stars watch, the wind is still, the silence is heavy in my heart. Wake, Love, wake! brim my empty cup, and with a breath of song ruffle the night.
হে পথিক, তুমি একা। আপনার মনে জানি না কেমনে অদেখার পেলে দেখা। যে-পথে পড়ে নি পায়ের চিহ্ন সে পথে চলিলে রাতে, আকাশে দেখেছ কোন্ সংকেত, কারেও নিলে না সাথে। তুঙ্গগিরির উঠিছ শিখরে যেখানে ভোরের তারা অসীম আলোকে করিছে আপন আলোর যাত্রা সারা। প্রথম যেদিন ফাল্গুনতাপে নবনির্ঝর জাগে, মহাসুদূরের অপরূপ রূপ দেখিতে সে পায় আগে। আছে আছে আছে, এই বাণী তার এক নিমেষেই ফুটে, অচেনা পথের আহ্বান শুনে অজানার পানে ছুটে। সেইমতো এক অকথিত ভাষা ধ্বনিল তোমার মাঝে, আছে আছে আছে, এ মহামন্ত্র প্রতি নিশ্বাসে বাজে। রোধিয়াছে পথ বন্ধুর করি অচল শিলার স্তূপ। নহে নহে নহে, এ নিষেধবাণী পাষাণে ধরেছে রূপ। জড়ের সে নীতি করে গর্জন ভীরুজন মরে দুলে, জনহীন পথে সংশয়মোহ রহে তর্জনী তুলে। অলস মনের আপনারি ছায়া শঙ্কিল কায়া ধরে, অতি নিরাপদ বিনাশের তলে বাঁচিতে চেয়ে সে মরে। নবজীবনের সংকটপথে হে তুমি অগ্রগামী, তোমার যাত্রা সীমা মানিবে না কোথাও যাবে না থামি। শিখরে শিখরে কেতন তোমার রেখে যাবে নব নব, দুর্গম-মাঝে পথ করি দিবে,-- জীবনের ব্রত তব। যত আগে যাবে দ্বিধা সন্দেহ ঘুচে যাবে পাছে পাছে, পায়ে পায়ে তব ধ্বনিয়া উঠিবে মহাবাণী -- "আছে আছে।'