বয়স বিংশতি হবে, শীর্ণ তনু তার বহু বরষের রোগে অস্থিচর্মসার। হেরি তার উদাসীন হাসিহীন মুখ মনে হয় সংসারে লেশমাত্র সুখ পারে না সে কোনোমতে করিতে শোষণ দিয়ে তার সর্বদেহ সর্বপ্রাণমন। স্বল্পপ্রাণ শীর্ণ দীর্ঘ জীর্ণ দেহভার শিশুসম কক্ষে বহি জননী তাহার আশাহীন দৃঢ়ধৈর্য মৌনম্লানমুখে প্রতিদিন লয়ে আসে পথের সম্মুখে। আসে যায় রেলগাড়ি, ধায় লোকজন-- সে চাঞ্চল্যে মুমূর্ষুর অনাসক্ত মন যদি কিছু ফিরে চায় জগতের পানে, এইটুকু আশা ধরি মা তাহারে আনে।
ফুল ছিঁড়ে লয় হাওয়া, সে পাওয়া মিথ্যে পাওয়া-- আনমনে তার পুষ্পের ভার ধুলায় ছড়িয়ে যাওয়া। যে সেই ধুলার ফুলে হার গেঁথে লয় তুলে হেলায় সে ধন হয় যে ভূষণ তাহারি মাথার চুলে। শুধায়ো না মোর গান কারে করেছিনু দান-- পথধুলা-'পরে আছে তারি তরে যার কাছে পাবে মান।