না বাঁচাবে আমায়
Songs
          না বাঁচাবে আমায় যদি মারবে কেন তবে?
          কিসের তরে এই আয়োজন এমন কলরবে?।
অগ্নিবাণে তূণ যে ভরা,    চরণভরে কাঁপে ধরা,
          জীবনদাতা মেতেছ যে মরণ-মহোৎসবে ॥
বক্ষ আমার এমন ক'রে বিদীর্ণ যে করো
          উৎস যদি না বাহিরায় হবে কেমনতরো?
এই-যে আমার ব্যথার খনি   জোগাবে ওই মুকুট-মণি--
          মরণদুখে জাগাবে মোর জীবনবল্লভে ॥
আরো দেখুন
রাজার বাড়ি
Stories
কুসমি জিগেস করলে, দাদামশায়, ইরুমাসির বোধ হয় খুব বুদ্ধি ছিল।
ছিল বই-কি, তোর চেয়ে বেশি ছিল।
আরো দেখুন
পান্নালাল
Stories
দাদামশায়, তোমার পাগলের দলের মধ্যে পান্নালাল ছিল খুব নতুন রকমের।
জান, দিদি? তোমার পাগলরা প্রত্যেকেই নতুন, কারও সঙ্গে কারও মিল হয় না। যেমন তোমার দাদামশায়। বিধাতার নতুন পরীক্ষা। ছাঁচ তিনি ভেঙে ফেলেন। সাধারণ লোকের বুদ্ধিতে মিল হয়, অসাধারণ পাগলের মিল হয় না। তোমাকে একটা উদাহরণ দেখাই--
আরো দেখুন
পায়ে চলার পথ
Stories
এই তো পায়ে চলার পথ।
এসেছে বনের মধ্যে দিয়ে মাঠে, মাঠের মধ্যে দিয়ে নদীর ধারে, খেয়াঘাটের পাশে বটগাছেরতলায়। তার পরে ও পারের ভাঙা ঘাট থেকে বেঁকে চলে গেছে গ্রামের মধ্যে; তার পরে তিসির খেতের ধার দিয়ে, আমবাগানের ছায়া দিয়ে, পদ্মদিঘির পাড় দিয়ে, রথতলার পাশ দিয়ে কোন্‌ গাঁয়ে গিয়ে পৌঁচেছে জানি নে।
আরো দেখুন
সংস্কার
Stories
চিত্রগুপ্ত এমন অনেক পাপের হিসাব বড়ো অক্ষরে তাঁর খাতায় জমা করেন যা থাকে পাপীর নিজের অগোচরে। তেমনি এমন পাপও ঘটে যাকে আমিই চিনি পাপ বলে, আর-কেউ না। যেটার কথা লিখতে বসেছি সেটা সেই জাতের। চিত্রগুপ্তের কাছে জবাবদিহি করবার পূর্বে আগে-ভাগে কবুল করলে অপরাধের মাত্রাটা হাল্‌কা হবে।
ব্যাপারটা ঘটেছিল কাল শনিবার দিনে। সেদিন আমাদের পাড়ায় জৈনদের মহলে কী একটা পরব ছিল। আমার স্ত্রী কলিকাকে নিয়ে মোটরে করে বেরিয়েছিলুম-- চায়ের নিমন্ত্রণ ছিল বন্ধু নয়নমোহনের বাড়িতে।
আরো দেখুন
কর্তার ভূত
Stories
বুড়ো কর্তার মরণকালে দেশসুদ্ধ সবাই বলে উঠল, 'তুমি গেলে আমাদের কী দশা হবে।'
শুনে তারও মনে দুঃখ হল। ভাবলে, 'আমি গেলে এদের ঠাণ্ডা রাখবে কে।'
আরো দেখুন
সমাপ্তি
Stories
অপূর্বকৃষ্ণ বি. এ. পাস করিয়া কলিকাতা হইতে দেশে ফিরিয়া আসিতেছেন।
নদীটি ক্ষুদ্র। বর্ষা অন্তে প্রায় শুকাইয়া যায়। এখন শ্রাবণের শেষে জলে ভরিয়া উঠিয়া একেবারে গ্রামের বেড়া ও বাঁশঝাড়ের তলদেশ চুম্বন করিয়া চলিয়াছে।
আরো দেখুন
গল্প
Stories
ছেলেটির যেমনি কথা ফুটল অমনি সে বললে, 'গল্প বলো।'
দিদিমা বলতে শুরু করলেন, 'এক রাজপুত্তুর, কোটালের পুত্তুর, সদাগরের পুত্তুর--'
আরো দেখুন
আমার এই রিক্ত ডালি
Songs
       আমার এই রিক্ত ডালি
                         দিব তোমারি পায়ে।
                     দিব কাঙালিনীর আঁচল
                         তোমার পথে পথে বিছায়ে।
                     যে পুষ্পে গাঁথ পুষ্পধনু
                         তারি ফুলে ফুলে হে অতনু,
                     আমার পূজা-নিবেদনের দৈন্য
                         দিয়ো ঘুচায়ে।
                     তোমার রণজয়ের অভিযানে
                         আমায় নিয়ো,
                     ফুলবাণের টিকা আমার ভালে
                         এঁকে দিয়ো!
                     আমার শূন্যতা দাও যদি
                         সুধায় ভরি
                     দিব তোমার জয়ধ্বনি
                         ঘোষণ করি;
                     ফাল্গুনের আহ্বান জাগাও
                         আমার কায়ে
                              দক্ষিণবায়ে॥
আরো দেখুন
37
Verses
I. 36. sur parkas, tanh rain kahan paiye
WHERE is THE night, when the sun is shining? If it is night, then the sun withdraws its light.
Where knowledge is, can ignorance endure? If there be ignorance, then knowledge must die.
If there be lust, how can love be there? Where there is love, there is no lust.
Lay hold on your sword, and join in the fight. Fight, O my brother, as long as life lasts.
Strike off your enemy's head, and there make an end of him quickly: then come, and bow your head at your King's Durbar.
He who is brave, never forsakes the battle: he who flies from it is no true fighter.
In the field of this body a great war goes forward, against passion, anger, pride, and greed:
It is in the kingdom of truth, contentment and purity, that this battle is raging; and the sword that rings forth most loudly is the sword of His Name.
Kabir says: 'When a brave knight takes the field, a host of cowards is put to flight.
It is a hard fight and a weary one, this fight of the truth-seeker: for the vow of the truth-seeker is more hard than that of the warrior, or of the widowed wife who would follow her husband.
For the warrior fights for a few hours, and the widow's struggle with death is soon ended:
But the truth-seeker's battle goes on day and night, as long as life lasts it never ceases.'
আরো দেখুন
সুখে থাকো
Songs
              সুখে থাকো আর সুখী করো সবে,
              তোমাদের প্রেম ধন্য হোক ভবে॥
              মঙ্গলের পথে থেকো নিরন্তর,
              মহত্ত্বের 'পরে রাখিয়ো নির্ভর--
ধ্রুবসত্য তাঁরে ধ্রুবতারা কোরো   সংশয়নিশীথে সংসার-অর্ণবে॥
চিরসুধাময় প্রেমের মিলন   মধুর করিয়া রাখুক জীবন,
দুজনার বলে সবল দুজন   জীবনের কাজ সাধিয়ো নীরবে॥
              কত দুঃখ আছে, কত অশ্রুজল--
              প্রেমবলে তবু থাকিয়ো অটল।
তাঁহারি ইচ্ছা হউক সফল   বিপদে সম্পদে শোকে উৎসবে॥
আরো দেখুন
একরাত্রি
Stories
সুরবালার সঙ্গে একত্রে পাঠশালায় গিয়াছি, বউ-বউ খেলিয়াছি। তাহাদের বাড়িতে গেলে সুরবালার মা আমাকে বড় যত্ন করিতেন এবং আমাদের দুইজনকে একত্র করিয়া  আপনা-আপনি বলাবলি করিতেন,'আহা দুটিতে বেশ মানায়।'
ছোট ছিলাম কিন্তু কথাটার অর্থ একরকম বুঝতে পারিতাম। সুরবালার প্রতি যে সর্বসাধারণের অপেক্ষা আমার কিছু বিশেষ দাবি ছিল, সে ধারণা আমার মনে বদ্ধমূল হইয়া গিয়াছিল। সেই অধিকারমদে মত্ত হইয়া তাহার প্রতি যে আমি শাসন এবং উপদ্রব না করিতাম তাহা নহে। সেও সহিষ্ণুভাবে আমার সকলরকম  ফরমাশ খাটিত এবং শাস্তি বহন করিত। পাড়ায় তাহার রূপের প্রশংসা ছিল, কিন্তু বর্বর বালকের চক্ষে সে সৌন্দর্যের কোনো গৌরব ছিল না-- আমি কেবল জানিতাম, সুরবালা আমারই প্রভুত্ব স্বীকার করিবার জন্য পিতৃগৃহে জন্মগ্রহণ করিয়াছিল, এইজন্য সে আমার বিশেষরূপ অবহেলার পাত্র।
আরো দেখুন
মানভঞ্জন
Stories
রমানাথ শীলের ত্রিতল অট্টালিকায় সর্ব্বোচ্চ তলের ঘরে গোপীনাথ শীলের স্ত্রী গিরিবালা বাস করে। শয়নকক্ষের দক্ষিণ দ্বারের সম্মুখে ফুলের টবে গুটিকতক বেলফুল এবং গোলাপফুলের গাছ; ছাতটি উচ্চ প্রাচীর দিয়া ঘেরা-- বহিরদৃশ্য দেখিবার জন্য প্রাচীরের মাঝে মাঝে একটি করিয়া ইট ফাঁক দেওয়া আছে। শোবার ঘরে নানা বেশ এবং বিবেশ-বিশিষ্ট বিলাতি নারীমূর্তির বাঁধানো এন্‌গ্রেভিং টাঙানো রহিয়াছে; কিন্তু প্রবেশদ্বারের সম্মুখবর্তী বৃহৎ আয়নার উপরে ষোড়শী গৃহস্বামিনীর যে প্রতিবিম্বটি পড়ে তাহা দেয়ালের কোনো ছবি অপেক্ষা সৌন্দর্যে ন্যূন নহে।
গিরিবালার সৌন্দর্য অকস্মাৎ আলোকরশ্মির ন্যায়, বিস্ময়ের ন্যায়, নিদ্রাভঙ্গে চেতনার ন্যায়, একেবারে চকিতে আসিয়া আঘাত করে এবং এক আঘাতে অভিভূত করিয়া দিতে পারে। তাহাকে দেখিলে মনে হয়, ইহাকে দেখিবার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না; চারি দিকে এবং চিরকাল যেরূপ দেখিয়া আসিতেছি এ একেবারে হঠাৎ তাহা হইতে অনেক স্বতন্ত্র।
আরো দেখুন
বিচ্ছেদ
Verses
আজ এই বাদলার দিন,
        এ মেঘদূতের দিন নয়।
    এ দিন অচলতায় বাঁধা।
        মেঘ চলছে না, চলছে না হাওয়া,
    টিপিটিপি বৃষ্টি
        ঘোমটার মতো পড়ে আছে
           দিনের মুখের উপর।
        সময়ে যেন স্রোত নেই,
    চার দিকে অবারিত আকাশ,
           অচঞ্চল অবসর।
           যেদিন মেঘদূত লিখেছেন কবি
               সেদিন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে নীল পাহাড়ের গায়ে।
                   দিগন্ত থেকে দিগন্তে ছুটেছে মেঘ,
           পুবে হাওয়া বয়েছে শ্যামজম্বুবনান্তকে দুলিয়ে দিয়ে।
                   যক্ষনারী বলে উঠেছে,
               মা গো, পাহাড়সুদ্ধ নিল বুঝি উড়িয়ে।
                   মেঘদূতে উড়ে চলে যাওয়ার বিরহ,
                       দুঃখের ভার পড়ল না তার 'পরে--
               সেই বিরহে ব্যথার উপর মুক্তি হয়েছে জয়ী।
সেদিনকার পৃথিবী জেগে উঠেছিল
        উচ্ছল ঝরনায়, উদ্‌বেল নদীস্রোতে,
               মুখরিত বনহিল্লোলে,
তার সঙ্গে দুলে দুলে উঠেছে
        মন্দাক্রান্তা ছন্দে বিরহীর বাণী।
একদা যখন মিলনে ছিল না বাধা
    তখন ব্যবধান ছিল সমস্ত বিশ্বে,
বিচিত্র পৃথিবীর বেষ্টনী পড়ে থাকত
           নিভৃত বাসরকক্ষের বাইরে।
যেদিন এল বিচ্ছেদ
    সেদিন বাঁধন-ছাড়া দুঃখ বেরোল
        নদী গিরি অরণ্যের উপর দিয়ে।
    কোণের কান্না মিলিয়ে গেল পথের উল্লাসে।
অবশেষে ব্যথার রূপ দেখা গেল
    যে কৈলাসে যাত্রা হল শেষ!
           সেখানে অচল ঐশ্বর্যের মাঝখানে
               প্রতীক্ষার নিশ্চল বেদনা।
অপূর্ণ যখন চলেছে পূর্ণের দিকে
        তার বিচ্ছেদের যাত্রাপথে
           আনন্দের নব নব পর্যায়।
পরিপূর্ণ অপেক্ষা করছে স্থির হয়ে;
           নিত্যপুষ্প, নিত্যচন্দ্রালোক,
        নিত্যই সে একা-- সেই তো একান্ত বিরহী।
যে অভিসারিকা তারই জয়,
        আনন্দে সে চলেছে কাঁটা মাড়িয়ে।
ভুল বলা হল বুঝি।
      সেও তো নেই স্থির হয়ে যে পরিপূর্ণ,
             সে যে বাজায় বাঁশি, প্রতীক্ষার বাঁশি--
         সুর তার এগিয়ে চলে অন্ধকার পথে।
      বাঞ্ছিতের আহ্বান আর অভিসারিকার চলা
             পদে পদে মিলেছে একই তালে।
         তাই নদী চলেছে যাত্রার ছন্দে,
             সমুদ্র দুলেছে আহ্বানের সুরে।
আরো দেখুন