মোটকথা - ১
Essays
দুই মাত্রা বা দুই মাত্রার গুণক নিয়ে যে-সব ছন্দ তারা পদাতিক; বোঝা সামলিয়ে ধীরপদক্ষেপে তাদের চাল। এই জাতের ছন্দকে পয়ারশ্রেণীয় বলব। সাধারণ পয়ারে প্রত্যেক পঙ্ক্তিতে দুটি করে ভাগ, ধ্বনির মাত্রা ও যতির মাত্রা মিলিয়ে প্রত্যেক ভাগে আটটি করে মাত্রা, সুতরাং সমগ্র পয়ারের ধ্বনিমাত্রাসংখ্যা চোদ্দ এবং তার সঙ্গে মিলেছে যতিমাত্রাসংখ্যা দুই, অতএব সর্বসমেত ষোলো মাত্রা।
আট মাত্রার উপর ঝোঁক না রেখে প্রত্যেক দুই মাত্রার উপর ঝোঁক যদি রাখি তবে সেই দুল্কি চালে পয়ারের পদমর্যাদার লাঘব হয়।
বচন নাহি তো মুখে । তবু মুখখানি ০ ০
হৃদয়ের কানে বলে । নয়নের বাণী ০ ০।
কেন । তার । মুখ । ভার । বুক । ধুক । ধুক । ০ ০,
চোখ । লাল । লাজে । গাল । রাঙা । টুক । টুক । ০ ০।
সুনিবিড় । শ্যামলতা । উঠিয়াছে । জেগে ০ ০
ধরণীর । বনতলে । গগনের । মেঘে ০ ০।
শ্রাবণধারে সঘনে
কাঁদিয়া মরে যামিনী,
ছোটে তিমিরগগনে
পথহারানো দামিনী।
চেয়ে থাকে মুখপানে,
সে চাওয়া নীরব গানে
মনে এসে বাজে,
যেন ধীর ধ্রুবতারা
কহে কথা ভাষাহারা
জনহীন সাঁঝে।
রিমি ঝিমি বরিষে শ্রাবণধারা,
ঝিল্লি ঝনকিছে ঝিনি ঝিনি;
দুরু দুরু হৃদয়ে বিরামহারা
তাকায়ে পথপানে বিরহিণী।
মহাভারতের কথা ০ ০ । অমৃতসমান ০ ০।
কাশীরাম দাস ভণে ০ ০ । শুনে পুণ্যবান্ ০ ০।
মহা ০ ০ ভারতের কথা ০ ০ । অমৃত ০ ০ সমা ০ ০ ন।
কাশীর ০ ০ ম দাস ভণে ০ ০ । শুনে ০ ০ পুণ্যবা ০ ০ ন্।
অভিসারযাত্রাপথে হৃদয়ের ভার
পদে পদে দেয় বক্ষে ব্যথার ঝংকার।
চলিতে চলিতে চরণে উছলে
চলিবার ব্যাকুলতা,
নূপুরে নূপুরে বাজে বনতলে
মনের অধীর কথা।
প্রভু বুদ্ধ লাগি আমি ভিক্ষা মাগি,
ওগো পূরবাসী, কে রয়েছ জাগি,
অনাথপিণ্ডদ কহিলা অম্বুদ-
নিনাদে।
বরষার রাতে জলের আঘাতে
পড়িতেছে যূথী ঝরিয়া,
পরিমলে তারি সজল পবন
করুণায় উঠে ভরিয়া।
নববর্ষার বারিসংঘাতে
পড়ে মল্লিকা ঝরিয়া,
সিক্তপবন সুগন্ধে তারি
কারুণ্যে উঠে ভরিয়া।
আঁখির পাতায় নিবিড় কাজল
গলিছে নয়নসলিলে।
চক্ষুর পল্লবে নিবিড় কজ্জ্বল
গলিছে অশ্রুর নির্ঝরে।
শ্রাবণের কালো ছায়া নেমে আসে তমালের বনে
যেন দিক্-ললনার গলিত কাজল-বরিষনে।
বর্ষার তমিস্রচ্ছায়া ব্যাপ্ত হল অরণ্যের তলে
যেন অশ্রুসিক্তচক্ষু দিগ্বধূর গলিত কজ্জলে।
আঁধার রাতি জ্বেলেছে বাতি
অযুতকোটি তারা,
আপন কারা-ভবনে পাছে
আপনি হয় হারা।
আঁধার রাতি জ্বেলেছে বাতি
আকাশ ভরি অযুত তারা
বদসি যদি কিঞ্চিদপি দন্তরুচিকৌমুদী
হরতি দরতিমিরমতি ঘোরম্ ০ ০।
কাক কালো বটে, পিক সেও কালো,
কালো সে ফিঙের বেশ,
তাহার অধিক কালো যে, কন্যা,
তোমার চিকন কেশ।
কাক কালো, কোকিল কালো,
কালো ফিঙের বেশ,
তাহার অধিক কালো, কন্যে,
তোমার চিকন কেশ।
টুমুস টুমুস বাদ্যি বাজে,
লোকে বলে কী,
শামুকরাজা বিয়ে করে
ঝিনুকরাজার ঝি
আরো দেখুন