আমার নাইবা হল পারে যাওয়া। যে হাওয়াতে চলত তরী অঙ্গেতে সেই লাগাই হাওয়া ॥ নেই যদি বা জমল পাড়ি ঘাট আছে তো বসতে পারি। আমার আশার তরী ডুবল যদি দেখব তোদের তরী-বাওয়া ॥ হাতের কাছে কোলের কাছে যা আছে সেই অনেক আছে। আমার সারা দিনের এই কি রে কাজ-- ওপার-পানে কেঁদে চাওয়া। কম কিছু মোর থাকে হেথা পুরিয়ে নেব প্রাণ দিয়ে তা। আমার সেইখানেতেই কল্পলতা যেখানে মোর দাবি-দাওয়া ॥
সুনীল সাগরের শ্যামল কিনারে দেখেছি পথে যেতে তুলনাহীনারে॥ এ কথা কভু আর পারে না ঘুচিতে, আছে সে নিখিলের মাধুরীরুচিতে। এ কথা শিখানু যে আমার বীণারে, গানেতে চিনালেম সে চির-চিনারে॥ সে কথা সুরে সুরে ছড়াব পিছনে স্বপনফসলের বিছনে বিছনে। মধুপগুঞ্জে সে লহরী তুলিবে, কুকুমকুঞ্জে সে পবনে দুলিবে, ঝরিবে শ্রাবণের বাদলসিচনে। শরতে ক্ষীণ মেঘে ভাসিবে আকাশে স্মরণবেদনার বরনে আঁকা সে। চকিতে ক্ষণে ক্ষণে পাব যে তাহারে ইমনে কেদারায় বেহাগে বাহারে॥
কেন নিবে গেল বাতি। আমি অধিক যতনে ঢেকেছিনু তারে জাগিয়া বাসররাতি, তাই নিবে গেল বাতি।। কেন ঝরে গেল ফুল। আমি বক্ষে চাপিয়া ধরেছিনু তারে চিন্তিত ভয়াকুল, তাই ঝরে গেল ফুল।। কেন মরে গেল নদী ।। আমি বাঁধ বাঁধি তারে চাহি ধরিবারে পাইবারে নিরবধি, তাই মরে গেল নদী।। কেন ছিঁড়ে গেল তার। আমি অধিক আবেগে প্রাণপণ বলে দিয়েছিনু ঝঙ্কার, তাই ছিঁড়ে গেল তার ।।