মোদের কিছু নাই রে নাই, আমরা ঘরে বাইরে গাই-- তাইরে নাইরে নাইরে না। না না না। যতই দিবস যায় রে যায় গাই রে সুখে হায় রে হায়-- তাইরে নাইরে নাইরে না। না না না। যারা সোনার চোরাবালির 'পরে পাকা ঘরের-ভিত্তি গড়ে তাদের সামনে মোরা গান গেয়ে যাই-- তাইরে নাইরে নাইরে না। না না না॥ যখন থেকে থেকে গাঁঠের পানে গাঁঠকাটারা দৃষ্টি হানে তখন শূন্যঝুলি দেখায়ে গাই-- তাইরে নাইরে নাইরে না। না না না॥ যখন দ্বারে আসে মরণবুড়ি মুখে তাহার বাজাই তুড়ি, তখন তান দিয়ে গান জুড়ি রে ভাই-- তাইরে নাইরে নাইরে না। না না না। এ যে বসন্তরাজ এসেছে আজ, বাইরে তাহার উজ্জ্বল সাজ, ওরে, অন্তরে তার বৈরাগী গায়-- তাইরে নাইরে নাইরে না। না না না। সে যে উৎসবদিন চুকিয়ে দিয়ে, ঝরিয়ে দিয়ে, শুকিয়ে দিয়ে, দুই রিক্ত হাতে তাল দিয়ে গায়-- তাইরে নাইরে নাইরে না। না না না॥
দিবস রজনী, আমি যেন কার আশায় আশায় থাকি। তাই চমকিত মন, চকিত শ্রবণ, তৃষিত আকুল আঁখি॥ চঞ্চল হয়ে ঘুরিয়ে বেড়াই, সদা মনে হয় যদি দেখা পাই-- 'কে আসিছে' বলে চমকিয়ে চাই কাননে ডাকিলে পাখি॥ জাগরণে তারে না দেখিতে পাই, থাকি স্বপনের আশে-- ঘুমের আড়ালে যদি ধরা দেয়, বাঁধিব স্বপনপাশে। এত ভালোবাসি, এত যারে চাই, মনে হয় না তো সে যে কাছে নাই-- যেন এ বাসনা ব্যাকুল আবেগে, তাহারে আনিবে ডাকি॥
ও মঞ্জরী, ও মঞ্জরী আমের মঞ্জরী, আজ হৃদয় তোমার উদাস হয়ে পড়ছে কি ঝরি॥ আমার গান যে তোমার গন্ধে মিশে দিশে দিশে ফিরে ফিরে ফেরে গুঞ্জরি॥ পূর্ণিমাচাঁদ তোমার শাখায় শাখায় তোমার গন্ধ-সাথে আপন আলো মাখায়। ওই দখিন-বাতাস গন্ধে পাগল ভাঙল আগল, ঘিরে ঘিরে ফিরে সঞ্চরি॥