কে এসে যায় ফিরে ফিরে আকুল নয়ননীরে । কে বৃথা আশাভরে চাহিছে মুখ’পরে । সে যে আমার জননী রে ।। কাহার সুধাময়ী বাণী মিলায় অনাদর মানি ! কাহার ভাষা হায় ভুলিতে সবে চায় । সে যে আমার জননী রে ।। ক্ষণেক স্নেহ-কোল ছাড়ি চিনিতে আর নাহি পারি । আপন সন্তান করিছে অপমান— সে যে আমার জননী রে ।। পুণ্য কুটিরে বিষণ্ণ কে বসি সাজাইয়া অন্ন । সে স্নেহ-উপচার রুচে না মুখে আর । সে যে আমার জননী রে ।।
আপনি আমার কোন্খানে বেড়াই তারি সন্ধানে ॥ নানান রূপে নানা বেশে ফেরে যেজন ছায়ার দেশে তার পরিচয় কেঁদে হেসে শেষ হবে কি, কে জানে ॥ আমার গানের গহন-মাঝে শুনেছিলেম যার ভাষা খুঁজে না পাই তার বাসা। বেলা কখন যায় গো বয়ে, আলো আসে মলিন হয়ে-- পথের বাঁশি যায় কী কয়ে বিকালবেলার মূলতানে।
আমার আঁধার ভালো, আলোর কাছে বিকিয়ে দেবে আপনাকে সে ॥ আলোরে যে লোপ ক'রে খায় সেই কুয়াশা সর্বনেশে ॥ অবুঝ শিশু মায়ের ঘরে সহজ মনে বিহার করে, অভিমানী জ্ঞানী তোমার বাহির দ্বারে ঠেকে এসে ॥ তোমার পথ আপনায় আপনি দেখায়, তাই বেয়ে, মা, চলব সোজা। যারা পথ দেখাবার ভিড় করে গো তারা কেবল বাড়ায় খোঁজা-- ওরা ডাকে আমায় পূজার ছলে, এসে দেখি দেউল-তলে-- আপন মনের বিকারটারে সাজিয়ে রাখে ছদ্মবেশে ॥