আমার হৃদয় তোমার আপন হাতের দোলে দোলাও, কে আমারে কী-যে বলে ভোলাও ভোলাও ॥ ওরা কেবল কথার পাকে নিত্য আমায় বেঁধে রাখে, বাঁশির ডাকে সকল বাঁধন খোলাও ॥ মনে পড়ে, কত-না দিন রাতি আমি ছিলেম তোমার খেলার সাথী। আজকে তুমি তেমনি ক'রে সামনে তোমার রাখো ধরে, আমার প্রাণে খেলার সে ঢেউ তোলাও ॥
কেমনে শুধিব বলো তোমার এ ঋণ। এ দয়া তোমার, মনে রবে চিরদিন। যবে এ হৃদয়মাঝে ছিল না জীবন, মনে হ'ত ধরা যেন মরুর মতন, সে হৃদে ঢালিয়ে তব প্রেমবারিধার নূতন জীবন যেন করিলে সঞ্চার। একদিন এ হৃদয়ে বাজিত প্রেমের গান, কবিতায় কবিতায় পূর্ণ যেন ছিল প্রাণ-- দিনে দিনে সুখগান থেমে গেল এ হৃদয়ে, নিশীথশ্মশানসম আছিল নীরব হয়ে-- সহসা উঠেছে বাজি তব করপরশনে, পুরানো সকল ভাব জাগিয়া উঠেছে মনে, বিরাজিছে এ হৃদয়ে যেন নব-ঊষাকাল, শূন্য হৃদয়ের যত ঘুচেছে আঁধারজাল। কেমনে শুধিব বলো তোমার এ ঋণ। এ দয়া তোমার, মনে রবে চিরদিন॥
সে যে মনের মানুষ, কেন তারে বসিয়ে রাখিস নয়নদ্বারে? ডাক্-না রে তোর বুকের ভিতর, নয়ন ভাসুক নয়নধারে ॥ যখন নিভবে আলো, আসবে রাতি, হৃদয়ে দিস আসন পাতি-- আসবে সে যে সঙ্গোপনে বিচ্ছেদেরই অন্ধকারে ॥ তার আসা-যাওয়ার গোপন পথে সে আসবে যাবে আপন মতে। তারে বাঁধবে ব'লে যেই করো পণ সে থাকে না, থাকে বাঁধন-- সেই বাঁধনে মনে মনে বাঁধিস কেবল আপনারে ॥