বর্ষণমন্দ্রিত অন্ধকারে এসেছি তোমারি এ দ্বারে, পথিকেরে লহো ডাকি তব মন্দিরের এক ধারে॥ বনপথ হতে, সুন্দরী, এনেছি মল্লিকামঞ্জলী-- তুমি লবে নিজ বেণীবন্ধে মনে রেখেছি এ দুরাশারে॥ কোনো কথা নাহি ব'লে ধীরে ধীরে ফিরে যাব চলে। ঝিল্লিঝঙ্কৃত নিশীথে পথে যেতে বাঁশরিতে শেষ গান পাঠাব তোমা-পানে শেষ উপহারে॥
বনে যদি ফুটল কুসুম নেই কেন সেই পাখি। কোন্ সুদূরের আকাশ হতে আনব তারে ডাকি॥ হাওয়ায় হাওয়ায় মাতন জাগে, পাতায় পাতায় নাচন লাগে গো-- এমন মধুর গানের বেলায় সেই শুধু রয় বাকি॥ উদাস-করা হৃদয়-হরা না জানি কোন্ ডাকে সাগর-পারের বনের ধারে কে ভুলালো তাকে। আমার হেথায় ফাগুন বৃথায় বারে বারে ডাকে যে তায় গো-- এমন রাতের ব্যাকুল ব্যথায় কেন সে দেয় ফাঁকি॥
দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইল না-- সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি। কান্নাহাসির বাঁধন তারা সইল না-- সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি॥ আমার প্রাণের গানের ভাষা শিখবে তারা ছিল আশা-- উড়ে গেল, সকল কথা কইল না-- সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি॥ স্বপন দেখি, যেন তারা কার আশে ফেরে আমার ভাঙা খাঁচার চার পাশে-- সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি। এত বেদন হয় কি ফাঁকি। ওরা কি সব ছায়ার পাখি। আকাশ-পারে কিছুই কি গো বইল না-- সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি॥