স্বপন-পারের ডাক শুনেছি, জেগে তাই তো ভাবি-- কেউ কখনো খুঁজে কি পায় স্বপ্নলোকের চাবি॥ নয় তো সেথায় যাবার তরে, নয় কিছু তো পাবার তরে, নাই কিছু তার দাবি-- বিশ্ব হতে হারিয়ে গেছে স্বপ্নলোকের চাবি॥ চাওয়া-পাওয়ার বুকের ভিতর না-পাওয়া ফুল ফোটে, দিশাহারা গন্ধে তারি আকাশ ভরে ওঠে। খুঁজে যারে বেড়াই গানে, প্রাণের গভীর অতল-পানে যে জন গেছে নাবি, সেই নিয়েছে চুরি করে স্বপ্নলোকের চাবি॥
পথিক পরান, চল্, চল্ সে পথে তুই যে পথ দিয়ে গেল রে তোর বিকেলবেলার জুঁই॥ সে পথ বেয়ে গেছে যে তোর সন্ধ্যামেঘের সোনা, প্রাণের ছায়াবীথির তলে গানের আনাগোনা-- রইল না কিছুই॥ যে পথে তার পাপড়ি দিয়ে বিছিয়ে গেল ভুঁই, পথিক পরান, চল্, চল্ সে পথে তুই। অন্ধকারে সন্ধ্যাযূথীর স্বপনময়ী ছায়া উঠবে ফুটে তারার মতো কায়াবিহীন মায়া-- ছুঁই তারে না ছুঁই॥
যে ছিল আমার স্বপনচারিণী তারে বুঝিতে পারি নি— দিন চলে গেছে খুঁজিতে খুঁজিতে। শুভক্ষনে কাছে ডাকিলে, লজ্জা আমার ঢাকিলে গো— তোমারে সহজে পেরেছি বুঝিতে। কে মোরে ফিরাবে অনাদরে কে মোরে ডাকিবে কাছে, কাহার প্রেমের বেদনায় আমার মূল্য আছে— এ নিরন্তর সংশয়ে আর পারি নে যুঝিতে। তোমারেই শুধু পেরেছি বুঝিতে॥