ওহে জীবনবল্লভ, ওহে সাধনদুর্লভ, আমি মর্মের কথা অন্তরব্যথা কিছুই নাহি কব– শুধু জীবন মন চরণে দিনু বুঝিয়া লহো সব। ( দিনু চরণতলে– কথা যা ছিল দিনু চরণতলে– প্রাণের বোঝা বুঝে লও, দিনু চরণতলে। ) আমি কী আর কব।।
এই সংসারপথসঙ্কট অতি কন্টকময় হে, আমি নীরবে যাব হৃদয়ে লয়ে প্রেমমুরতি তব। ( নীরবে যাব– পথের কাঁটা মানব না, নীরবে যাব। হৃদয়ব্যথায় কাঁদব না, নীরবে যাব। ) আমি কী আর কব।।
আমি সুখদুখ সব তুচ্ছ করিনু প্রিয়-অপ্রিয় হে– তুমি নিজ হাতে যাহা সঁপিবে তাহা মাথায় তুলিয়া লব। ( আমি মাথায় লব– যাহা দিবে তাই মাথায় লব– সুখ দুখ তব পদধূলি ব’লে মাথায় লব। ) আমি কী আর কব।।
অপরাধ যদি ক’রে থাকি পদে, না করো যদি ক্ষমা, তবে পরানপ্রিয় দিয়ো হে দিয়ো বেদনা নব নব। ( দিয়ো বেদনা– যদি ভালো বোঝ দিয়ো বেদনা– বিচারে যদি দোষী হই দিয়ো বেদনা। ) আমি কী আর কব।।
তবু ফেলো না দূরে, দিবসশেষে ডেকে নিয়ো চরণে– তুমি ছাড়া আর কী আছে আমার ! মৃত্যু-আঁধার ভব। ( নিয়ো চরণে– ভবের খেলা সারা হলে নিয়ো চরণে– দিন ফুরাইলে, দীননাথ, নিয়ো চরণে। ) আমি কী আর কব।।
পুরি হতে পালিয়েছে যে পুরসুন্দরী কোথা তারে ধরি, কোথা তারে ধরি। রক্ষা রবে না, রক্ষা রবে না-- এমন ক্ষতি রাজার সবে না, রক্ষা রবে না। বন হতে কেন গেল অশোকমঞ্জরী ফাল্গুনের অঙ্গন শূন্য করি। ওরে কে তুই ভুলালি, তারে কে তুই ভুলালি-- ফিরিয়ে দে তারে মোদের বনের দুলালী, তারে কে তুই ভুলালি।
না জানি কোথা এলুম, এ যে ঘোর বন। কোথা গেল সে করিশিশু, কোথা লুকাল! একে ত জটিল বন, তাহে আঁধার ঘন! যাক্-না যাবে সে কত দূর, কত দূর-- যাব পিছে পিছে-- না না না না, ও কি শুনি! ওই সে সরযূতীরে করিছে সলিল পান শবদ শুনি যে ওই, এই তবে ছাড়ি বাণ!