শান্তিনিকেতন, ২২ আষাঢ়, ১৩৪১


 

  কাঠবিড়ালি (kathbirali)


কাঠবিড়ালির ছানাদুটি

          আঁচলতলায় ঢাকা,

পায় সে কোমল করুণ হাতে

          পরশ সুধামাখা।

                   এই দেখাটি দেখে এলেম

                    ক্ষণকালের মাঝে,

সেই থেকে আজ আমার মনে

          সুরের মতো বাজে।

চাঁপাগাছের আড়াল থেকে

          একলা সাঁঝের তারা

একটুখানি ক্ষীণ মাধুরী

          জাগায় যেমনধারা,

তরল কলধ্বনি যেমন

          বাজে জলের পাকে

গ্রামের ধারে বিজন ঘাটে

          ছোটো নদীর বাঁকে,

লেবুর ডালে খুশি যেমন

          প্রথম জেগে ওঠে

একটু যখন গন্ধ নিয়ে

          একটি কুঁড়ি ফোটে,

দুপুর বেলায় পাখি যেমন--

          দেখতে না পাই যাকে--

ঘন ছায়ায় সমস্ত দিন

          মৃদুল সুরে ডাকে,

তেমনিতরো ওই ছবিটির

          মধুরসের কণা

ক্ষণকালের তরে আমায়

          করেছে আনমনা।

দুঃখসুখের বোঝা নিয়ে

          চলি আপন মনে,

তখন জীবন-পথের ধারে

          গোপন কোণে কোণে

হঠাৎ দেখি চিরাভ্যাসের

          অন্তরালের কাছে

                   লক্ষ্মীদেবীর মালার থেকে

                    ছিন্ন পড়ে আছে

         ধূলির সঙ্গে মিলিয়ে গিয়ে

                    টুকরো রতন কত--

         আজকে আমার এই দেখাটি

                    দেখি তারির মতো।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •