জগতের মাঝখানে যুগে যুগে হইতেছে জমা সুতীব্র অক্ষমা। অগোচরে কোনোখানে একটি রেখার হলে ভুল দীর্ঘকালে অকস্মাৎ আপনারে করে সে নির্মূল। ভিত্তি যার ধ্রুব বলে হয়েছিল মনে তলে তার ভূমিকম্প টলে ওঠে প্রলয়নর্তনে। প্রাণী কত এসেছিল দলে দলে জীবনের রঙ্গভূমে অপর্যাপ্ত শক্তির সম্বলে-- সে শক্তিই ভ্রম তার, ক্রমেই অসহ্য হয়ে লুপ্ত করে দেয় মহাভার। কেহ নাহি জানে, এ বিশ্বের কোন্খানে প্রতি ক্ষণে জমা দারুণ অক্ষমা। দৃষ্টির অতীত ত্রুটি করিয়া ভেদন সম্বন্ধের দৃঢ় সূত্র করিছে ছেদন; ইঙ্গিতের স্ফুলিঙ্গের ভ্রম পশ্চাতে ফেরার পথ চিরতরে করিছে দুর্গম। দারুণ ভাঙন এ যে পূর্ণেরই আদেশে; কী অপূর্ব সৃষ্টি তার দেখা দিবে শেষে-- গুঁড়াবে অবাধ্য মাটি, বাধা হবে দূর, বহিয়া নূতন প্রাণ উঠিবে অঙ্কুর। হে অক্ষমা, সৃষ্টির বিধানে তুমি শক্তি যে পরমা; শান্তির পথের কাঁটা তব পদপাতে বিদলিত হয়ে যায় বারবার আঘাতে আঘাতে।
দুঃস্বপন কোথা হতে এসে জীবনে বাধায় গণ্ডগোল। কেঁদে উঠে জেগে দেখি শেষে কিছু নাই আছে মার কোল। ভেবেছিনু আর-কেহ বুঝি, ভয়ে তাই প্রাণপণে যুঝি, তব হাসি দেখে আজ বুঝি তুমিই দিয়েছ মোরে দোল। এ জীবন সদা দেয় নাড়া লয়ে তার সুখ দুখ ভয়; কিছু যেন নাই গো সে ছাড়া, সেই যেন মোর সমুদয়। এ ঘোর কাটিয়া যাবে চোখে নিমেষেই প্রভাত-আলোকে, পরিপূর্ণ তোমার সম্মুখে থেমে যাবে সকল কল্লোল।