তব দক্ষিণ হাতের পরশ কর নি সমর্পণ। লেখে আর মোছে তব আলো ছায়া ভাবনার প্রাঙ্গণে খনে খনে আলিপন। বৈশাখে কৃশ নদী পূর্ণ স্রোতের প্রসাদ না দিল যদি শুধু কুণ্ঠিত বিশীর্ণ ধারা তীরের প্রান্তে জাগালো পিয়াসি মন। যতটুকু পাই ভীরু বাসনার অঞ্জলিতে নাই বা উচ্ছলিল, সারা দিবসের দৈন্যের শেষে সঞ্চয় সে যে সারা জীবনের স্বপ্নের আয়োজন।
কেন চুপ করে আছি, কেন কথা নাই, শুধাইছ তাই। কথা দিয়ে ডেকে আনি যারে দেবতারে, বাহির দ্বারের কাছে এসে ফিরে যায় হেসে। মৌনের বিপুল শক্তিপাশে ধরা দিয়ে আপনে সে আসে আসে পরিপূর্ণতায় হৃদয়ের গভীর গুহায়। অধীর আহ্বানে রবাহূত প্রসাদের মূল্য হয় চ্যুত। স্বর্গ হতে বর, সেও আনে অসম্মান ভিক্ষার সমান। ক্ষুব্ধ বাণী যবে শান্ত হয়ে আসে দৈববাণী নামে সেই অবকাশে। নীরব আমার পূজা তাই, স্তবগান নাই; আর্দ্র স্বরে ঊর্ধ্বপানে চেয়ে নাহি ডাকে, স্তব্ধ হয়ে থাকে। হিমাদ্রিশিখরে নিত্য নীরবতা তার ব্যাপ্ত করি রহে চারি ধার; নির্লিপ্ত সে সুদূরতা বাক্যহীন বিশাল আহ্বান আকাশে আকাশে দেয় টান, মেঘপুঞ্জ কোথা থেকে অবারিত অভিষেকে অজস্র সহস্রধারে পুণ্য করে তারে। না-কওয়ার না-চাওয়ার সেই সাধনায় হয়ে লীন সার্থক শন্তিতে যাক দিন।