শ্রীযুক্ত কালিদাস নাগ কল্যাণীয়েষু আমার ছুটি চার দিকে ধু ধু করছে ধান-কেটে-নেওয়া খেতের মতো। আশ্বিনে সবাই গেছে বাড়ি, তাদের সকলের ছুটির পলাতকা ধারা মিলেছে আমার একলা ছুটির বিস্তৃত মোহানায় এসে এই রাঙামাটির দীর্ঘ পথপ্রান্তে। আমার ছুটি ব্যাপ্ত হয়ে গেল দিগন্তপ্রসারী বিরহের জনহীনতায়; তার তেপান্তর মাঠে কল্পলোকের রাজপুত্র ছুটিয়েছে পবনবাহন ঘোড়া মরণসাগরের নীলিমায় ঘেরা স্মৃতিদ্বীপের পথে। সেখানে রাজকন্যা চিরবিরহিণী ছায়াভবনের নিভৃত মন্দিরে। এমনি করে আমার ঠাঁইবদল হল এই লোক থেকে লোকাতীতে। আমার মনের মধ্যে ছুটি নেমেছে যেন পদ্মার উপর শেষ শরতের প্রশান্তি। বাইরে তরঙ্গ গেছে থেমে, গতিবেগ রয়েছে ভিতরে। সাঙ্গ হল দুই তীর নিয়ে ভাঙন-গড়নের উৎসাহ। ছোটো ছোটো আবর্ত চলেছে ঘুরে ঘুরে আনমনা চিত্তপ্রবাহে ভেসে-যাওয়া অসংলগ্ন ভাবনা। সমস্ত আকাশের তারার ছায়াগুলিকে আঁচলে ভরে নেবার অবকাশ তার বক্ষতলে রাত্রের অন্ধকারে। মনে পড়ে অল্প বয়সের ছুটি; তখন হাওয়া-বদল ঘর থেকে ছাদে; লুকিয়ে আসত ছুটি, কাজের বেড়া ডিঙিয়ে, নীল আকাশে বিছিয়ে দিত বিরহের সুনিবিড় শূন্যতা, শিরায় শিরায় মিড় দিত তীব্র টানে না-পাওয়ার না-বোঝার বেদনায় এড়িয়ে-যাওয়ার ব্যর্থতার সুরে। সেই বিরহগীতগুঞ্জরিত পথের মাঝখান দিয়ে কখনো বা চমকে চলে গেছে শ্যামলবরন মাধুরী চকিত কটাক্ষের অব্যক্ত বাণী বিক্ষেপ ক'রে, বসন্তবনের হরিণী যেমন দীর্ঘনিশ্বাসে ছুটে যায় দিগন্তপারের নিরুদ্দেশে। এমনি ক'রে চিরদিন জেনে এসেছি মোহনকে লুকিয়ে দেখার অবকাশ এই ছুটি অকারণ বিরহের নিঃসীম নির্জনতায়। হাওয়া-বদল চাই-- এই কথাটা আজ হঠাৎ হাঁপিয়ে উঠল ঘরে ঘরে হাজার লোকের মনে। টাইম-টেবিলের গহনে গহনে ওদের খোঁজ হল সারা, সাঙ্গ হল গাঁঠরি-বাঁধা, বিরল হল গাঁঠের কড়ি। এ দিকে, উনপঞ্চাশ পবনের লাগাম যাঁর হাতে তিনি আকাশে আকাশে উঠেছেন হেসে ওদের ব্যাপার দেখে। আমার নজরে পড়েছে সেই হাসি, তাই চুপচাপ বসে আছি এই চাতালে কেদারটা টেনে নিয়ে। দেখলেম বর্ষা গেল চলে, কালো ফরাশটা নিল গুটিয়ে। ভাদ্রশেষের নিরেট গুমটের উপরে থেকে থেকে ধাক্কা লাগল সংশয়িত উত্তরে হাওয়ার। সাঁওতাল ছেলেরা শেষ করেছে কেয়াফুল বেচা, মাঠের দূরে দূরে ছড়িয়ে পড়েছে গোরুর পাল, শ্রাবণভাদ্রের ভূরিভোজের অবসানে তাদের ভাবখানা অতি মন্থর; কী জানি, মুখ-ডোবানো রসালো ঘাসেই তাদের তৃপ্তি না পিঠে কাঁচা রৌদ্র লাগানো আলস্যে। হাওয়া-বদলের দায় আমার নয়; তার জন্যে আছেন স্বয়ং দিক্পালেরা রেলোয়ে স্টেশনের বাইরে, তাঁরাই বিশ্বের ছুটিবিভাগে রসসৃষ্টির কারিগর। অস্ত-আকাশে লাগল তাঁদের নতুন তুলির টান অপূর্ব আলোকের বর্ণচ্ছটায়। প্রজাপতির দল নামালেন রৌদ্রে ঝলমল ফুলভরা টগরের ডালে, পাতায় পাতায় যেন বাহবাধ্বনি উঠেছে ওদের হালকা ডানার এলোমেলো তালের রঙিন নৃত্যে। আমার আঙিনার ধারে ধারে এতদিন চলেছিল এক-সার জুঁই-বেলের ফোটা-ঝরার ছন্দ, সংকেত এল, তারা সরে পড়ল নেপথ্যে; শিউলি এল ব্যতিব্যস্ত হয়ে; এখনো বিদায় মিলল না মালতীর। কাশের বনে লুটিয়ে পড়েছে শুক্লাসপ্তমীর জ্যোৎস্না-- পূজার পার্বণে চাঁদের নূতন উত্তরী বর্ষজলে ধোপ-দেওয়া। আজ নি-খরচার হাওয়া-বদল জলে স্থলে। খরিদদারের দল তাকে এড়িয়ে চলে গেল দোকানে বাজারে। বিধাতার দামী দান থাকে লুকোনো বিনা দামের প্রশ্রয়ে, সুলভ ঘোমটার নীচে থাকে দুর্লভের পরিচয়। আজ এই নি-কড়িয়া ছুটির অজস্রতা সরিয়েছেন তিনি ভিড়ের থেকে জনকয়েক অপরাজেয় কুঁড়ে মানুষের প্রাঙ্গণে। তাদের জন্যেই পেতেছেন খাস-দরবারের আসর তাঁর আম-দরবারের মাঝখানেই-- কোনো সীমানা নেই আঁকা। এই ক'জনের দিকে তাকিয়ে উৎসবের বীনকারকে তিনি বায়না দিয়ে এসেছেন অসংখ্য যুগ থেকে। বাঁশি বাজল। আমার দুই চক্ষু যোগ দিল কয়খানা হালকা মেঘের দলে। ওরা ভেসে পড়েছে নিঃশেষে মিলিয়ে যাবার খেয়ায়। আমার মন বেরোল নির্জনে-আসন-পাতা শান্ত অভিসারে, যা-কিছু আছে সমস্ত পেরিয়ে যাবার যাত্রায়। আমার এই স্তব্ধ এই ভ্রমণ হবে সারা, ছুটি হবে শেষ, হাওয়া-বদলের দল ফিরে আসবে ভিড় ক'রে, আসন্ন হবে বাকি-পড়া কাজের তাগিদ। ফুরোবে আমার ফিরতি-টিকিটের মেয়াদ, ফিরতে হবে এইখান থেকে এইখানেই, মাঝখানে পার হব অসীম সমুদ্র।
THE GENERAL came before the silent and angry King and saluting him said: 'The village is punished, the men are stricken to dust, and the women cower in their unlit homes afraid to weep aloud. The High Priest stood up and blessed the King and cried: 'God's mercy is ever upon you.' The Clown, when he heard this, burst out laughing and startled the court. The King's frown darkened. 'The honour of the throne,' said the minister, 'is upheld by the King's prowess and the blessing of Almighty God.' Louder laughed the Clown, and the King growled,-'Unseemly mirth!' 'God has showered many blessings upon your head,' said the Clown; 'the one he bestowed on me was the gift of laughter.' 'This gift will cost you your life,' said the King, gripping his sword with his right hand. Yet the Clown stood up and laughed till he laughed no more. A shadow of dread fell upon the Court, for they heard that laughter echoing in the depth of God's silence.