ভাবি বসে বসে গত জীবনের কথা, কাঁচা মনে ছিল কী বিষম মূঢ়তা। শেষে ধিক্কারে বলি হাত নেড়ে, যাক গে সে কথা যাক গে। তরুণ বেলাতে যে খেলা খেলাতে ভয় ছিল হারবার, তারি লাগি, প্রিয়ে, সংশয়ে মোরে ফিরিয়েছ বার বার। কৃপণ কৃপার ভাঙা কণা একটুক মনে দেয় নাই সুখ। সে যুগের শেষে আজ বলি হেসে, কম কি সে কৌতুক যতটুকু ছিল ভাগ্যে, দুঃখের কথা থাক্ গে। পঞ্চমী তিথি বনের আড়াল থেকে দেখা দিয়েছিল ছায়া দিয়ে মুখ ঢেকে। মহা আক্ষেপে বলেছি সেদিন, এ ছল কিসের জন্য। পরিতাপে জ্বলি আজ আমি বলি, সিকি চাঁদিনীর আলো দেউলে নিশার অমাবস্যার চেয়ে যে অনেক ভালো। বলি আরবার, এসো পঞ্চমী, এসো, চাপা হাসিটুকু হেসো, আধখানি বেঁকে ছলনায় ঢেকে না জানিয়ে ভালোবেসো। দয়া, ফাঁকি নামে গণ্য, আমারে করুক ধন্য। আজ খুলিয়াছি পুরানো স্মৃতির ঝুলি, দেখি নেড়েচেড়ে ভুলের দুঃখগুলি। হায় হায় এ কী, যাহা কিছু দেখি সকলি যে পরিহাস্য। ভাগ্যের হাসি কৌতুক করি সেদিন সে কোন্ ছলে আপনার ছবি দেখিতে চাহিল আমার অশ্রুজলে। এসো ফিরে এসো সেই ঢাকা বাঁকা হাসি, পালা শেষ করো আসি। মূঢ় বলিয়া করতালি দিয়া যাও মোরে সম্ভাষি। আজ করো তারি ভাষ্য যা ছিল অবিশ্বাস্য। বয়স গিয়েছে, হাসিবার ক্ষমতাটি বিধাতা দিয়েছে, কুয়াশা গিয়েছে কাটি। দুখদুর্দিন কালো বরনের মুখোশ করেছে ছিন্ন। দীর্ঘ পথের শেষ গিরিশিরে উঠে গেছে আজ কবি। সেথা হতে তার ভূতভবিষ্য সব দেখে যেন ছবি। ভয়ের মূর্তি যেন যাত্রার সঙ্, মেখেছে কুশ্রী রঙ। দিনগুলি যেন পশুদলে চলে, ঘণ্টা বাজায়ে গলে। কেবল ভিন্ন ভিন্ন সাদা কালো যত চিহ্ন।
বাছা রে, তোর চক্ষে কেন জল। কে তোরে যে কী বলেছে আমায় খুলে বল্। লিখতে গিয়ে হাতে মুখে মেখেছ সব কালি,নোংরা ব'লে তাই দিয়েছে গালি? ছি ছি, উচিত এ কি। পূর্ণশশী মাখে মসী -- নোংরা বলুক দেখি। বাছা রে, তোর সবাই ধরে দোষ। আমি দেখি সকল-তাতে এদের অসন্তোষ। খেলতে গিয়ে কাপড়খানা ছিঁড়ে খুঁড়ে এলে তাই কি বলে লক্ষ্মীছাড়া ছেলে। ছি ছি, কেমন ধারা। ছেঁড়া মেঘে প্রভাত হাসে, সে কি লক্ষ্মীছাড়া। কান দিয়ো না তোমায় কে কী বলে। তোমার নামে অপবাদ যে ক্রমেই বেড়ে চলে। মিষ্টি তুমি ভালোবাস তাই কি ঘরে পরে লোভী বলে তোমার নিন্দে করে! ছি ছি, হবে কী। তোমায় যারা ভালোবাসে তারা তবে কী।