যেতে যেতে চায় না যেতে ফিরে ফিরে চায়, সবাই মিলে পথে চলা হল আমার দায়। দুয়ার ধরে দাঁড়িয়ে থাকে, দেয় না সাড়া হাজার ডাকে-- বাঁধন এদের সাধন-ধন, ছিঁড়তে যে ভয় পায়। আবেশভরে ধুলায় প'ড়ে কতই করে ছল, যখন বেলা যাবে চলে ফেলবে আঁখিজল। নাই ভরসা, নাই যে সাহস, চিত্ত অবশ, চরণ অলস-- লতার মতো জড়িয়ে ধরে আপন বেদনায়।
কেউ চেনা নয় সব মানুষই অজানা। চলেছে আপনার রহস্যে আপনি একাকী। সেখানে তার দোসর নেই। সংসারের ছাপমারা কাঠামোয় মানুষের সীমা দিই বানিয়ে। সংজ্ঞার বেড়া-দেওয়া বসতির মধ্যে বাঁধা মাইনের কাজ করে সে। থাকে সাধারণের চিহ্ন নিয়ে ললাটে। এমন সময় কোথা থেকে ভালোবাসার বসন্ত-হাওয়া লাগে, সীমার আড়ালটা যায় উড়ে, বেরিয়ে পড়ে চির-অচেনা। সামনে তাকে দেখি স্বয়ংস্বতন্ত্র, অপূর্ব, অসাধারণ, তার জুড়ি কেউ নেই। তার সঙ্গে যোগ দেবার বেলায় বাঁধতে হয় গানের সেতু, ফুলের ভাষায় করি তার অভ্যর্থনা। চোখ বলে, যা দেখলুম, তুমি আছ তাকে পেরিয়ে। মন বলে চোখে-দেখা কানে-শোনার ওপারে যে রহস্য তুমি এসেছ সেই অগমের দূত,-- রাত্রি যেমন আসে পৃথিবীর সামনে নক্ষত্রলোক অবারিত ক'রে। তখন হঠাৎ দেখি আমার মধ্যেকার অচেনাকে, তখন আপন অনুভবের তল খুঁজে পাইনে, সেই অনুভব "তিলে তিলে নূতন হোয়।"