মিছে হাসি মিছে বাঁশি মিছে এ যৌবন, মিছে এই দরশের পরশের খেলা। চেয়ে দেখো, পবিত্র এ মানবজীবন, কে ইহারে অকাতরে করে অবহেলা! ভেসে ভেসে এই মহা চরাচরস্রোতে কে জানে গো আসিয়াছে কোন্খান হতে, কোথা হতে নিয়ে এল প্রেমের আভাস, কোন্ অন্ধকার ভেদি উঠিল আলোতে। এ নহে খেলার ধন, যৌবনের আশ-- বোলো না ইহার কানে আবেশের বাণী! নহে নহে এ তোমার বাসনার দাস, তোমার ক্ষুধার মাঝে আনিয়ো না টানি! এ তোমার ঈশ্বরের মঙ্গল-আশ্বাস, স্বর্গের আলোক তব এই মুখখানি।
এ কথা স্মরণে রাখা কেন গো কঠিন তুমি আছ সব চেয়ে, আছ নিশিদিন, আছ প্রতি ক্ষণে--আছ দূরে, আছ কাছে, যাহা-কিছু আছে, তুমি আছ ব'লে আছে। যেমনি প্রবেশ আমি করি লোকালয়ে, যখনি মানুষ আসে স্তুতিনিন্দা লয়ে-- লয়ে রাগ, লয়ে দ্বেষ, লয়ে গর্ব তার অমনি সংসার ধরে পর্বত-আকার আবরিয়া ঊর্ধ্বলোক; তরঙ্গিয়া উঠে লাভজয় লোভক্ষোভ; নরের মুকুটে যে হীরক জ্বলে তারি আলোক-ঝলকে অন্য আলো নাহি হেরি দ্যুলোকে ভূলোকে। মানুষ সম্মুখে এলে কেন সেই ক্ষণে তোমার সম্মুখে আছি নাহি পড়ে মনে?