কলছন্দে পূর্ণ তার প্রাণ-- নিত্য বহমান ভাষার কল্লোলে জাগাইয়া তোলে চারি ধারে প্রত্যহের জড়তারে; সংগীতে তরঙ্গ তুলি হাসিতে ফেনিল তার ছোটো দিনগুলি। আঁখি তার কথা কয়, বাহুভঙ্গি কত কথা বলে, চরণ যখন চলে কথা কয়ে যায়-- যে কথাটি অরণ্যের পাতায় পাতায়; যে কথাটি ঢেউ তোলে আশ্বিনে ধানের খেতে, প্রান্ত হতে প্রান্তে যায় চলে; যে কথাটি নিশীথতিমিরে, তারায় তারায় কাঁপে অধীর মির্মিরে; যে কথাটি মহুয়ার বনে মধুপগুঞ্জনে সারাবেলা উঠিছে চঞ্চলি-- নাম কি কাকলী।
আপন হতে বাহির হয়ে বাইরে দাঁড়া, বুকের মাঝে বিশ্বলোকের পাবি সাড়া। এই-যে বিপুল ঢেউ লেগেছে তোর মাঝেতে উঠুক নেচে, সকল পরান দিক-না নাড়া-- বাইরে দাঁড়া, বাইরে দাঁড়া। বোস্-না ভ্রমর এই নীলিমায় আসন লয়ে অরুণ-আলোর স্বর্ণরেণু মাখা হয়ে। যেখানেতে অগাধ ছুটি মেল্ সেথা তোর ডানা দুটি, সবার মাঝে পাবি ছাড়া-- বাইরে দাঁড়া, বাইরে দাঁড়া।