নাম্নী - নাগরী (namni nagori)
ব্যঙ্গসুনিপুণা,
শ্লেষবাণসন্ধানদারুণা!
অনুগ্রহবর্ষণের মাঝে
বিদ্রূপবিদ্যুৎঘাত অকস্মাৎ মর্মে এসে বাজে।
সে যেন তুফান
যাহারে চঞ্চল করে সে তরীকে করে খানখান
অট্টহাস্য আঘাতিয়া এপাশে ওপাশে;
প্রশ্রয়ের বীথিকায় ঘাসে ঘাসে
রেখেছে সে কণ্টক-অঙ্কুর বুনে বুনে;
অদৃশ্য আগুনে
কুঞ্জ তার বেড়িয়াছে;
যারা আসে কাছে
সব থেকে তারা দূরে রয়;
মোহমন্ত্রে যে হৃদয়
করে জয়
তারি 'পরে অবজ্ঞায় দারুণ নির্দয়।
আপন তপস্যা লয়ে যে পুরুষ নিশ্চল সদাই,
যে উহারে ফিরে চাহে নাই,
জানি সেই উদাসীন
একদিন
জিনিয়াছে ওরে;
জ্বালাময়ী তারি পায়ে দীপ্ত দীপ দিল অর্ঘ্য ভরে।
বিদুষী নিয়েছে বিদ্যা শুধু চিত্তে নয়,
আপন রূপের সাথে ছন্দ তারে দিল অঙ্গময়;
বুদ্ধি তার ললাটিকা,
চক্ষুর তারায় বুদ্ধি জ্বলে দীপশিখা;
বিদ্যা দিয়ে রচে নাই পণ্ডিতের স্থূল অহংকার,
বিদ্যারে করেছে অলংকার।
প্রসাধনসাধনে চতুরা--
জানে সে ঢালিতে সুরা
ভূষণভঙ্গিতে,
অলক্তের আরক্ত ইঙ্গিতে।
জাদুকরী বচনে চলনে;
গোপন সে নাহি করে আপন ছলনে;
অকপট মিথ্যারে সে নানা রসে করিয়া মধুর
নিন্দা তার করি দেয় দূর;
জ্যোৎস্নার মতন
গোপনেও নহে সে গোপন।
আঁধার আলোরি কোলে রয়েছে জাগরি--
নাম কি নাগরী।