আঠারো (kothar upore kotha cholechho sajiye)
কথার উপরে কথা চলেছ সাজিয়ে দিনরাতি,
এইবার থামো তুমি। বাক্যের মন্দিরচূড়া গাঁথি
যত ঊর্ধ্বে তোলো তারে তার চেয়ে আরো ঊর্ধ্বে ধায়
গাঁথুনির অন্তহীন উন্মত্ততা। থামিতে না চায়
রচনার স্পর্ধা তব; ভুলে গেছ , থামার পূর্ণতা
রচনার পরিত্রাণ; ভুলে গেছ নির্বাক্ দেবতা
বেদিতে বসিবে আসি যবে, কথার দেউলখানি
কথার অতীত মৌনে লভিবে চরমতম বাণী।
মহানিস্তব্ধের লাগি অবকাশ রেখে দিয়ো বাকি,
উপকরণের স্তূপে রচিয়ো না অভ্রভেদী ফাঁকি
অমৃতের স্থান রোধি। নির্মাণ-নেশায় যদি মাত
সৃষ্টি হবে গুরুভার, তার মাঝে লীলা রবে না তো।
থামিবার দিন এলে থামিতে না যদি থাকে জানা
নীড় গেঁথে গেঁথে পাখি আকাশেতে উড়িবার ডানা
ব্যর্থ করি দিবে। থামো তুমি থামো। সন্ধ্যা হয়ে আসে,
শান্তির ইঙ্গিত নামে দিবসের প্রগল্ভ প্রকাশে।
ছায়াহীন আলোকের সভার দিনের যত কথা
আপনারে রিক্ত করি রাত্রির গভীর সার্থকতা
এসেছে ভরিয়া নিতে। তোমার বীণার শত তারে
মত্ততার নৃত্য ছিল এতক্ষণ ঝংকারে ঝংকারে
বিরাম বিশ্রামহীন-- প্রত্যক্ষের জনতা তেয়াগি
নেপথ্যে যাক সে চলে স্মরণের নির্জনের লাগি
ল'য়ে তার গীত-অবশেষ,কথিত বাণীর ধারা
অসীমের অকথিত বাণীর সমুদ্রে হোক সারা।