স্নেহ উপহার (sneha upahaar)
শ্রীমতী ইন্দিরা প্রাণাধিকাসু।
বাব্লা।
আয় রে বাছা কোলে বসে চা' মোর মুখ-পানে,
হাসিখুশি প্রাণখানি তোর প্রভাত ডেকে আনে।
আমায় দেখে আসিস ছুটে, আমায় বাসিস ভালো,
কোথা হতে পড়লি প্রাণে তুই রে উষার আলো!
দেখ্ রে প্রাণে স্নেহের মতো সাদা সাদা জুঁই ফুটেছে।
দেখ্ রে, আমার গানের সাথে ফুলের গন্ধ জড়িয়ে গেছে।
গেথেছি রে গানের মালা, ভোরের বেলা বনে এসে
মনে বড়ো সাধ হয়েছে পরাব তোর এলোকেশে!
গানের সাথে ফুলের সাথে মুখখানি মানাবে ভালো,
আয় রে তবে আয় রে মেয়ে দেখ্ রে চেয়ে রাত পোহালো!
কচিমুখটি ঘিরে দেব ললিতরাগিণী দিয়ে,
বাপের কাছে মায়ের কাছে দেখিয়া আসবি ছুটে গিয়ে!
চাঁদনি রাতে বেড়াই ছাতে মুখখানি তোর মনে পড়ে,
তোর কথাটাই কিলিবিলি মনের মধ্যে নড়েচড়ে!
হাসি হাসি মুখখানি তোর ভেসে ভেসে বেড়ায় কাছে,
হাসি যেন এগিয়ে এল, মুখটি যেন পিছিয়ে আছে!
কচি প্রাণের আনন্দ তোর ভাঙা বুকে দে ছড়িয়ে,
ছোটো দুটি হাত দিয়ে তোর গলাটি মোর ধর জড়িয়ে!
বিজন প্রাণের দ্বারে বসে করবি রে তুই ছেলেখেলা,
চুপ করে তাই বসে বসে দেখব আমি সন্ধেবেলা।
কোথায় আছিস, সাড়া দে রে, বুকের কাছে আয় রে তবে,
তোর মুখেতে গানগুলি মোর কেমন শোনায় শুনতে হবে!
আমি যেন দাঁড়িয়ে আছি একটা বাবলা গাছের মতো
বড়ো বড়ো কাঁটার ভয়ে তফাত থাকে লতা যত।
সকাল হলে মনের সুখে ডালে ডালে ডাকে পাখি,
আমার কাঁটা-ডালে কেউ ডাকে না চুপ করে তাই দাঁড়িয়ে থাকি!
নেই বা লতা এল কাছে, নেই বা পাখি বসল শাখে,
যদি আমার বুকের কাছে বাবলা ফুলটি ফুটে থাকে!
বাতাসেতে দুলে দুলে ছড়িয়ে দেয় রে মিষ্টি হাসি,
কাঁটা-জন্ম ভুলে গিয়ে তাই দেখে হরষে ভাসি!
দূর কর ছাই, ঝোঁকের মাথায় বলে ফেললেম কত কী যে?
কথাগুলো ঠেকছে যেন চোখের জলে ভিজে ভিজে!
রবি কাকা।