এ মোহ ক'দিন থাকে, এ মায়া মিলায়, কিছুত পারে না আর বাঁধিয়া রাখিতে। কোমল বাহুর ডোর ছিন্ন হয়ে যায়, মদিরা উথলে নাকো মদির আঁখিতে। কেহ কারে নাহি চিনে আঁধার নিশায়। ফুল ফোটা সাঙ্গ হলে গাহে না পাখিতে। কোথা সেই হাসিপ্রান্ত চুম্বনতৃষিত রাঙা পুষ্পটুকু যেন প্রস্ফুট অধর! কোথা কুসুমিত তনু পূর্ণবিকশিত, কম্পিত পুলকভরে, যৌবনকাতর! তখন কি মনে পড়ে সেই ব্যাকুলতা, সেই চিরপিপাসিত যৌবনের কথা, সেই প্রাণ পরিপূর্ণ মরণ-অনল-- মনে পড়ে হাসি আসে? চোখে আসে জল?
পান্থ তুমি, পান্থজনের সখা হে, পথে চলাই সেই তো তোমায় পাওয়া। যাত্রাপথের আনন্দগান যে গাহে তারি কণ্ঠে তোমারি গান গাওয়া। চায় না সে জন পিছন-পানে ফিরে, বায় না তরী কেবল তীরে তীরে, তুফান তারে ডাকে অকূল নীরে যার পরানে লাগল তোমার হাওয়া। পথে চলাই সেই তো তোমায় পাওয়া। পান্থ তুমি, পান্থজনের সখা হে, পথিক-চিত্তে তোমার তরী বাওয়া। দুয়ার খুলে সমুখ-পানে যে চাহে তার চাওয়া যে তোমার পানে চাওয়া। বিপদ বাধা কিছুই ডরে না সে, রয় না পড়ে কোনো লাভের আশে, যাবার লাগি মন তারি উদাসে-- যাওয়া সে যে তোমার পানে যাওয়া। পথে চলাই সেই তো তোমায় পাওয়া।