কেউ যে কারে চিনি নাকো সেটা মস্ত বাঁচন। তা না হলে নাচিয়ে দিত বিষম তুর্কি-নাচন। বুকের মধ্যে মনটা থাকে, মনের মধ্যে চিন্তা-- সেইখানেতেই নিজের ডিমে সদাই তিনি দিন তা। বাইরে যা পাই সম্জে নেব তারি আইন-কানুন, অন্তরেতে যা আছে তা অন্তর্যামীই জানুন। চাই নে রে, মন চাই নে। মুখের মধ্যে যেটুকু পাই যে হাসি আর যে কথাটাই যে কলা আর যে ছলনাই তাই নে রে মন, তাই নে। বাইরে থাকুক মধুর মূর্তি, সুধামুখের হাস্য, তরল চোখে সরল দৃষ্টি-- করব না তার ভাষ্য। বাহু যদি তেমন করে জড়ায় বাহুবন্ধ আমি দুটি চক্ষু মুদে রইব হয়ে অন্ধ-- কে যাবে ভাই, মনের মধ্যে মনের কথা ধরতে? কীটের খোঁজে কে দেবে হাত কেউটে সাপের গর্তে? চাই নে রে, মন চাই নে। মুখের মধ্যে যেটুকু পাই যে হাসি আর যে কথাটাই যে কলা আর যে ছলনাই তাই নে রে মন, তাই নে। মন নিয়ে কেউ বাঁচে নাকো, মন বলে যা পায় রে কোনো জন্মে মন সেটা নয় জানে না কেউ হায় রে। ওটা কেবল কথার কথা, মন কি কেহ চিনিস? আছে কারো আপন হাতে মন ব'লে এক জিনিস? চলেন তিনি গোপন চালে, স্বাধীন তাঁহার ইচ্ছে-- কেই বা তাঁরে দিচ্ছে এবং কেই বা তাঁরে নিচ্ছে! চাই নে রে, মন চাই নে। মুখের মধ্যে যেটুকু পাই যে হাসি আর যে কথাটাই যে কলা আর যে ছলনাই তাই নে রে মন, তাই নে।
পেঁচোটাকে মাসি তার যত দেয় আস্করা, মুশকিল ঘটে তত এক সাথে বাস করা। হঠাৎ চিমটি কাটে কপালের চামড়ায়-- বলে সে, 'এমনি ক'রে ভিমরুল কামড়ায়।' আমার বিছানা নিয়ে খেলা ওর চাষ-করা-- মাথার বালিশ থেকে তুলোগুলো হ্রাস-করা।
অন্তরের সে সম্পদ ফেলেছি হারায়ে। তাই মোরা লজ্জানত; তাই সর্ব গায়ে ক্ষুধার্ত দুর্ভর দৈন্য করিছে দংশন; তাই আজি ব্রাহ্মণের বিরল বসন সম্মান বহে না আর; নাহি ধ্যানবল, শুধু জপমাত্র আছে; শুচিত্ব কেবল চিত্তহীন অর্থহীন অভ্যস্ত আচার। সন্তোষের অন্তরেতে বীর্য নাহি আর, কেবল জড়ত্বপুঞ্জ;ধর্ম প্রাণহীন ভারসম চেপে আছে আড়ষ্ট কঠিন। তাই আজি দলে দলে চাই ছুটিবারে পশ্চিমের পরিত্যক্ত বস্ত্র লুটিবারে লুকাতে প্রাচীন দৈন্য। বৃথা চেষ্টা ভাই, সব সজ্জা লজ্জা-ভরা চিত্ত যেথা নাই।