কালকে রাতে মেঘের গরজনে রিমিঝিমি-বাদল-বরিষনে ভাবিতেছিলাম একা একা-- স্বপ্ন যদি যায় রে দেখা আসে যেন তাহার মূর্তি ধ'রে বাদলা রাতে আধেক ঘুমঘোরে। মাঠে মাঠে বাতাস ফিরে মাতি, বৃথা স্বপ্নে কাটল সারা রাতি। হায় রে, সত্য কঠিন ভারী, ইচ্ছামত গড়তে নারি-- স্বপ্ন সেও চলে আপন মতে, আমি চলি আমার শূন্য পথে। কালকে ছিল এমন ঘন রাত, আকুল ধারে এমন বারিপাত, মিথ্যা যদি মধুর রূপে আসত কাছে চুপে চুপে তাহা হলে কাহার হত ক্ষতি স্বপ্ন যদি ধরত সে মূরতি?
"সাত-আটটে সাতাশ," আমি বলেছিলাম বলে গুরুমশায় আমার 'পরে উঠল রাগে জ্বলে। মা গো, তুমি পাঁচ পয়সায় এবার রথের দিনে সেই যে রঙিন পুতুলখানি আপনি দিলে কিনে খাতার নিচে ছিল ঢাকা; দেখালে এক ছেলে, গুরুমশায় রেগেমেগে ভেঙে দিলেন ফেলে। বল্লেন, "তোর দিনরাত্তির কেবল যত খেলা। একটুও তোর মন বসে না পড়াশুনার বেলা!" মা গো, আমি জানাই কাকে? ওঁর কি গুরু আছে? আমি যদি নালিশ করি এক্খনি তাঁর কাছে? কোনোরকম খেলার পুতুল নেই কি, মা, ওঁর ঘরে সত্যি কি ওঁর একটুও মন নেই পুতুলের 'পরে? সকালসাঁজে তাদের নিয়ে করতে গিয়ে খেলা কোনো পড়ায় করেন নি কি কোনোরকম হেলা? ওঁর যদি সেই পুতুল নিয়ে ভাঙেন কেহ রাগে, বল দেখি, মা, ওঁর মনে তা কেমনতরো লাগে?