দুঃখের বরষায় চক্ষের জল যেই নামল বক্ষের দরজায় বন্ধুর রথ সেই থামল। মিলনের পাত্রটি পূর্ণ যে বিচ্ছেদে বেদনায়; অর্পিনু হাতে তাঁর, খেদ নাই, আর মোর খেদ নাই। বহুদিন-বঞ্চিত অন্তরে সঞ্চিত কী আশা, চক্ষের নিমেষেই মিটল সে পরশের তিয়াষা। এতদিনে জানলেম যে কাঁদন কাঁদলেম সে কাহার জন্য। ধন্য এ জাগরণ, ধন্য এ ক্রন্দন, ধন্য রে ধন্য।
অজস্র দিনের আলো, জানি, একদিন দু চক্ষুরে দিয়েছিলে ঋণ। ফিরায়ে নেবার দাবি জানায়েছ আজ তুমি, মহারাজ। শোধ করে দিতে হবে জানি, তবু কেন সন্ধ্যাদীপে ফেল ছায়াখানি। রচিলে যে আলো দিয়ে তব বিশ্বতল আমি সেথা অতিথি কেবল। হেথা হোথা যদি পড়ে থাকে কোনো ক্ষুদ্র ফাঁকে নাই হল পুরা সেটুকু টুকুরা-- রেখে যেয়ো ফেলে অবহেলে, যেথা তব রথ শেষ চিহ্ন রেখে যায় অন্তিম ধুলায় সেথায় রচিতে দাও আমার জগৎ। অল্প কিছু আলো থাক্, অল্প কিছু ছায়া আর কিছু মায়া। ছায়াপথে লুপ্ত আলোকের পিছু হয়তো কুড়ায়ে পাবে কিছু-- কণামাত্র লেশ তোমার ঋণের অবশেষ।