গতকাল পাঁচটায় তেলে ভেজে মাছটায় বাবু রেখেছিল পাতে, ছিল সাথে ছেঁচ্কি। নেয়ে এসে দেখে চেয়ে বিড়ালে গিয়েছে খেয়ে-- চোঁ চোঁ করে ওঠে পেট আর ওঠে হেঁচ্কি। মহা রোষে তিনুরায় যেতে চায় আগ্রায়, পাঁজিতে রয়েছে লেখা দিন আছে কল্য। রান্না চড়াতে গেলে পাছে ট্রেন নাই মেলে ভোরে উঠে তাই আজ হাওড়ায় চলল।
তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি বিচিত্র ছলনাজালে, হে ছলনাময়ী। মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদ পেতেছ নিপুণ হাতে সরল জীবনে। এই প্রবঞ্চনা দিয়ে মহত্ত্বেরে করেছ চিহ্নিত; তার তরে রাখ নি গোপন রাত্রি। তোমার জ্যোতিষ্ক তা'রে যে-পথ দেখায় সে যে তার অন্তরের পথ, সে যে চিরস্বচ্ছ, সহজ বিশ্বাসে সে যে করে তা'রে চিরসমুজ্জল। বাহিরে কুটিল হোক অন্তরে সে ঋজু, এই নিয়ে তাহার গৌরব। লোকে তা'রে বলে বিড়ম্বিত। সত্যেরে সে পায় আপন আলোকে ধৌত অন্তরে অন্তরে। কিছুতে পারে না তা'রে প্রবঞ্চিতে, শেষ পুরস্কার নিয়ে যায় সে যে আপন ভান্ডারে। অনায়াসে যে পেরেছে ছলনা সহিতে সে পায় তোমার হাতে শান্তির অক্ষয় অধিকার।
এ ঘরে ফুরালো খেলা, এল দ্বার রুধিবার বেলা। বিলয়বিলীন দিনশেষে ফিরিয়া দাঁড়াও এসে যে ছিলে গোপনচর জীবনের অন্তরতর। ক্ষণিক মুহূর্ততরে চরম আলোকে দেখে নিই স্বপ্নভাঙা চোখে; চিনে নিই, এ লীলার শেষ পরিচয়ে কী তুমি ফেলিয়া গেলে, কী রাখিলে অন্তিম সঞ্চয়ে। কাছের দেখায় দেখা পূর্ণ হয় নাই, মনে-মনে ভাবি তাই-- বিচ্ছেদের দূরদিগন্তের ভূমিকায় পরিপূর্ণ দেখা দিবে অস্তরবিরশ্মির রেখায়। জানি না, বুঝিব কিনা প্রলয়ের সীমায় সীমায় শুভ্রে আর কালিমায় কেন এই আসা আর যাওয়া, কেন হারাবার লাগি এতখানি পাওয়া। জানি না, এ আজিকার মুছে-ফেলা ছবি আবার নূতন রঙে আঁকিবে কি তুমি, শিল্পীকবি।