আজ কি তপন তুমি যাবে অস্তাচলে না শুনে আমার মুখে একটিও গান। দাঁড়াও গো, বিদায়ের দুটি কথা বলে আজিকার দিন আমি করি অবসান। থামো ওই সমুদ্রের প্রান্তরেখা-'পরে, মুখে মোর রাখো তব একমাত্র আঁখি। দিবসের শেষ পলে নিমেষের তরে তুমি চেয়ে থাকো আর আমি চেয়ে থাকি। দুজনের আঁখি-'পরে সায়াহ্ন-আঁধার আঁখির পাতার মতো আসুক মুদিয়া, গভীর তিমিরস্নিগ্ধ শান্তির পাথার নিবায়ে ফেলুক আজি দুটি দীপ্ত হিয়া। শেষ গান সাঙ্গ করে থেমে গেছে পাখি, আমার এ গানখানি ছিল শুধু বাকি॥
তুমি যে তারে দেখ নি চেয়ে জানিত সে তা মনে, -- ব্যথার ছায়া পড়িত ছেয়ে কালো চোখের কোণে। জীবনশিখা নিবিল তার, ডুবিল তারি সাথে অবমানিত দুঃখভার অবহেলার রাতে। দীপাবলীর থালাতে নাই তাহার ম্লান হিয়া, তারায় তারি আলোক তাই উঠিল উজলিয়া। স্বাগতবাণী ছিল সে মেলি ভাষাবিহীন মুখে, বহুজনের বাণীরে ঠেলি বাজে কি তব বুকে। নিকটে তব এসেছিল যে, সে কথা বুঝাবারে অসীম দূরে গিয়েছে ও-যে শূন্যে খুঁজাবারে। সেখানে গিয়ে করেছে চুপ, ভিক্ষা গেল থামি, তাই কি তার সত্যরূপ হৃদয়ে এল নামি।