গান গাহি বলে কেন অহংকার করা। শুধু গাহি বলে কেন কাঁদি না শরমে। খাঁচার পাখির মতো গান গেয়ে মরা, এই কি মা আদি অন্ত মানবজনমে। সুখ নাই, সুখ নাই, শুধু মর্মব্যথা-- মরীচিকা-পানে শুধু মরি পিপাসায়। কে দেখালে প্রলোভন, শূন্য অমরতা, প্রাণে ম'রে গানে কি রে বেঁচে থাকা যায়। কে আছ মলিন হেথা, কে আছ দুর্বল, মোরে তোমাদের মাঝে করো গো আহ্বান; বারেক একত্রে বসে ফেলি অশ্রুজল-- দূর করি হীন গর্ব, শূন্য অভিমান। তার পরে একসাথে এস কাজ করি, কেবলি বিলাপগান দূরে পরিহরি॥
কত-না তুষারপুঞ্জ আছে সুপ্ত হয়ে অগ্রভেদী হিমাদ্রির সুদূর আলয়ে পাষাণপ্রাচীর-মাঝে। হে সিন্ধু মহান, তুমি তো তাদের কারে কর না আহ্বান আপন অতল হতে। আপনার মাঝে আছে তারা অবরুদ্ধ, কানে নাহি বাজে বিশ্বের সংগীত। প্রভাতের রৌদ্রকরে যে তুষার বয়ে যায়, নদী হয়ে ঝরে, বন্ধ টুটি ছুটি চলে,হে সিন্ধু মহান, সেও তো শোনে নি কভু তোমার আহ্বান। সে সুদূর গঙ্গোত্রীর শিখরচূড়ায় তোমার গম্ভীর গান কে শুনিতে পায়! আপন স্রোতের বেগে কী গভীর টানে তোমারে সে খুঁজে পায় সেই তাহা জানে।