এ কবিতাগুলিও তোমাকে দিলাম। বহুকাল হইল, তোমার কাছে বসিয়াই লিখিতাম, তোমাকেই শুনাইতাম। সেই সমস্ত স্নেহের স্মৃতি ইহাদের মধ্যে বিরাজ করিতেছে। তাই, মনে হইতেছে তুমি যেখানেই থাক না কেন, এ লেখাগুলি তোমার চোখে পড়িবেই।
য়ুরোপের সাহিত্যে মহাকাব্য লিখিবার কাল চলিয়া গিয়াছে। কোন কবি মহাকাব্য লিখেন না, অনেক পাঠক মহাকাব্য পড়েন না, অনেকে বিদ্যালয়ের পাঠ্য বলিয়া পড়েন, অনেকে কর্ত্তব্য কর্ম্ম বলিয়া পড়েন। অনেক সমালোচক দুঃখ করিতেছেন-- এখন আর মহাকাব্য লিখা হয় না, কবিত্বের যুগ চলিয়া গিয়াছে। অনেক পণ্ডিতের মত এই যে, সভ্যতার পাড়ে যতই চর পড়িবে কবিত্বের পাড়ে ততই ভাঙ্গন ধরিবে! প্রমাণ কি? না, সভ্যতার অপরিণত অবস্থায় মহাকাব্য লেখা হইয়াছে, এখন আর মহাকাব্য লেখা হয় না। তাঁহাদের মতে বোধ করি এমন সময় আসিবে, যখন কোন কাব্যই লেখা হইবে না। সভ্যতার সমস্ত অঙ্গে যেরূপ পরিবর্ত্তন আরম্ভ হইয়াছে কবিতার অঙ্গেও যে সেইরূপ পরিবর্ত্তন হইবে ইহাই সম্ভবপর বলিয়া বোধ হয়। কবিতা সভ্যতা-ছাড়া একটা আকাশকুসুম নহে। কবিতা নিতান্তই আশ্মানদার নয়। তাহার সমস্ত ঘরবাড়িই আশ্মানে নহে। তাহার জমিদারিও যথেষ্ট আছে।