যদি কেহ নাহি চায়, আমি লইব, তোমার সকল দুখ আমি সহিব। আমার হৃদয় মন, সব দিব বিসর্জন, তোমার হৃদয়-ভার আমি বহিব। ভুল-ভাঙা দিবালোকে, চাহিব তোমার চোখে, প্রশান্ত সুখের কথা আমি কহিব।
দূর রজনীর স্বপন লাগে আজ নূতনের হাসিতে, দূর ফাগুনের বেদন জাগে আজ ফাগুনের বাঁশিতে॥ হায় রে সে কাল হায় রে কখন চলে যায় রে আজ এ কালের মরীচিকায় নতুন মায়ায় ভাসিতে॥ যে মহাকাল দিন ফুরালে আমার কুসুম ঝরালো সেই তোমারি তরুণ ভালে ফুলের মালা পরালো। শুনিয়ে শেষের কথা সে কাঁদিয়ে ছিল হতাশে, তোমার মাঝে নতুন সাজে শূন্য আবার ভরালো। আমরা খেলা খেলেছিলেম, আমরাও গান গেয়েছি। আমরাও পাল মেলেছিলেম, আমরা তরী বেয়েছি। হারায় নি তা হারায় নি বৈতরণী পারায় নি-- নবীন চোখের চপল আলোয় সে কাল ফিরে পেয়েছি।
এ তো খেলা নয়, খেলা নয়। এ যে হৃদয়-দহন-জ্বালা, সখী। এ যে, প্রাণভরা ব্যাকুলতা, গোপন মর্মের ব্যথা, এ যে, কাহার চরণোদ্দেশে জীবন মরণ ঢালা। কে যেন সতত মোরে ডাকিয়ে আকুল করে, যাই যাই করে প্রাণ, যেতে পারি নে। যে কথা বলিতে চাহি, তা বুঝি বলিতে নাহি, কোথায় নামায়ে রাখি, সখী, এ প্রেমের ডালা। যতনে গাঁথিয়ে শেষে, পরাতে পারি নে মালা।