দিয়ে গেনু বসন্তের এই গানখানি-- বরষ ফুরায়ে যাবে, ভুলে যাবে জানি॥ তবু তো ফাল্গুনরাতে এ গানের বেদনাতে আঁখি তব ছলোছলো, এই বহু মানি॥ চাহি না রহিতে বসে ফুরাইলে বেলা, তখনি চলিয়া যাব শেষ হবে খেলা। আসিবে ফাল্গুন পুন, তখন আবার শুনো নব পথিকেরই গানে নূতনের বাণী।
বিদায় করেছ যারে নয়ন-জলে, এখন ফিরাবে তারে কিসের ছলে গো॥ আজি মধু সমীরণে নিশীথে কুসুমবনে তারে কি পড়েছে মনে বকুলতলে॥ সে দিনও তো মধুনিশি প্রাণে গিয়েছিল মিশি, মুকুলিত দশ দিশি কুসুমদলে। দুটি সোহাগের বাণী যদি হত কানাকানি যদি ঐ মালাখানি পরাতে গলে। এখন ফিরাবে তারে কিসের ছলে গো মধুনিশি পূর্ণিমার ফিরে আসে বার বার, সে জন ফেরে না আর যে গেছে চলে ছিল তিথি অনকূল, শুধু নিমেষের ভুল-- চিরদিন তৃষাকুল পরান জ্বলে। এখন ফিরাবে তারে কিসের ছলে গো। ।
কী ফুল ঝরিল বিপুল অন্ধকারে। গন্ধ ছড়ালো ঘুমের প্রান্তপারে॥ একা এসেছিল ভুলে অন্ধরাতের কূলে অরুণ-আলোর বন্দনা করিবারে। ক্ষীণ দেহে মরি মরি সে যে নিয়েছিল বরি অসীম সাহসে নিষ্ফল সাধনারে॥ কী যে তার রূপ দেখা হল না তো চোখে, জানি না কী নামে স্মরণ করিব ওকে। আঁধারে যাহারা চলে সেই তারাদের দলে এসে ফিরে গেল বিরহের ধারে ধারে। করুণ মাধুরীখানি কহিতে জানে না বাণী কেন এসেছিল রাতের বন্ধ দ্বারে॥