আমার খেলা যখন ছিল তোমার সনে তখন কে তুমি তা কে জানত। তখন ছিল না ভয়, ছিল না লাজ মনে, জীবন বহে যেত অশান্ত ॥ তুমি ভোরের বেলা ডাক দিয়েছ কত যেন আমার আপন সখার মতো, হেসে তোমার সাথে ফিরেছিলেম ছুটে সে দিন কত-না বন-বনান্ত ॥ ওগো, সেদিন তুমি গাইতে যে-সব গান কোনো অর্থ তাহার কে জানত। শুধু সঙ্গে তারি গাইত আমার প্রাণ, সদা নাচত হৃদয় অশান্ত। হঠাৎ খেলার শেষে আজ কী দেখি ছবি-- স্তব্ধ আকাশ, নীরব শশী রবি, তোমার চরণ-পানে নয়ন করি নত ভুবন দাঁড়িয়ে আছে একান্ত ॥
ফল ফলাবার আশা আমি মনে রাখি নি রে। আজ আমি তাই মুকুল ঝরাই দক্ষিণসমীরে॥ বসন্তগান পাখিরা গায়, বাতাসে তার সুর ঝরে যায়-- মুকুল-ঝরার ব্যাকুল খেলা আমারি সেই রাগিণীরে॥ জানি নে ভাই, ভাবি নে তাই কী হবে মোর দশা যখন আমার সারা হবে সকল ঝরা খসা। এই কথা মোর শূন্য ডালে বাজবে সে দিন তালে তালে-- "চরম দেওয়ায় সব দিয়েছি মধুর মধুযামিনীরে'॥
মোর স্বপন-তরীর কে তুই নেয়ে। লাগল পালে নেশার হাওয়া, পাগল পরান চলে গেয়ে। আমায় ভুলিয়ে দিয়ে যা তোর দুলিয়ে দিয়ে না, ও তোর সুদূর ঘাটে চল্ রে বেয়ে। আমার ভাবনা তো সব মিছে, আমার সব পড়ে থাক্ পিছে। তোমারঘোমটা খুলে দাও তোমার নয়ন তুলে চাও, দাও হাসিতে মোর পরান ছেয়ে॥