সারা নিশি ছিলেম শুয়ে বিজন ভুঁয়ে আমার মেঠো ফুলের পাশাপাশি, তখন শুনেছিলেম তারার বাঁশি॥ যখন সকালবেলা খুঁজে দেখি স্বপ্নে-শোনা সে সুর একি আমার মেঠো ফুলের চোখের জলে সুর উঠে ভাসি॥ এ সুর আমি খুঁজেছিলেম রাজার ঘরে, শেষে ধরা দিল ধরার ধূলির 'পরে। এ যে ঘাসের কোলে আলোর ভাষা আকাশ-হতে-ভেসে-আসা-- এ যে মাটির কোলে মানিক-খসা হাসিরাশি॥
মুখখানি কর মলিন বিধুর যাবার বেলা-- জানি আমি জানি, সে তব মধুর ছলের খেলা ॥ গোপন চিহ্ন এঁকে যাবে তব রথে-- জানি তুমি তারে ভুলিবে না কোনোমতে যার সাথে তব হল এক দিন মিলনমেলা ॥ জানি আমি যবে আঁখিজল ভরে রসের স্নানে মিলনের বীজ অঙ্কুর ধরে নবীন প্রাণে। খনে খনে এই চিরবিরহের ভান, খনে খনে এই ভয়রোমাঞ্চদান-- তোমার প্রণয়ে সত্য সোহাগে মিথ্যা হেলা ॥
আমার পরান লয়ে কী খেলা খেলাবে ওগো পরানপ্রিয় কোথা হতে ভেসে কূলে লেগেছে চরণমূলে তুলে দেখিয়ো ॥ এ নহে গো তৃণদল, ভেসে আসা ফুলফল-- এ যে ব্যথাভরা মন মনে রাখিয়ো ॥ কেন আসে কেন যায় কেহ না জানে। কে আসে কাহার পাশে কিসের টানে। রাখ যদি ভালোবেসে চিরপ্রাণ পাইবে সে, ফেলে যদি যাও তবে বাঁচিবে কি ও॥