কে ডাকে! আমি কভু ফিরে নাহি চাই। কত ফুল ফুটে উঠে, কত ফুল যায় টুটে, আমি শুধু বহে চলে যাই। পরশ পুলক-রস ভরা রেখে যাই, নাহি দিই ধরা। উড়ে আসে ফুলবাস, লতাপাতা ফেলে শ্বাস, বনে বনে উঠে হা-হুতাশ, চকিতে শুনিতে শুধু পাই, চলে যাই। আমি কভু ফিরে নাহি চাই।
কূল থেকে মোর গানের তরী দিলেম খুলে, সাগর-মাঝে ভাসিয়ে দিলেম পালটি তুলে ॥ যেখানে ঐ কোকিল ডাকে ছায়াতলে সেখানে নয়, যেখানে ঐ গ্রামের বধূ আসে জলে সেখানে নয়, যেখানে নীল মরণলীলা উঠছে দুলে সেখানে মোর গানের তরী দিলেম খুলে ॥ এবার, বীণা, তোমায় আমায় আমরা একা-- অন্ধকারে নাইবা কারে গেল দেখা॥ কুঞ্জবনের শাখা হতে যে ফুল তোলে সে ফুল এ নয়, বাতায়নের লতা হতে যে ফুল দোলে সে ফুল এ নয়-- দিশাহারা আকাশ-ভরা সুরের ফুলে সেই দিকে মোর গানের তরী দিলেম খুলে ॥
আমি ভয় করব না ভয় করব না। দু বেলা মরার আগে মরব না, ভাই, মরব না ॥ তরীখানা বাইতে গেলে মাঝে মাঝে তুফান মেলে-- তাই ব'লে হাল ছেড়ে দিয়ে ধরব না, কান্নাকাটি ধরব না ॥ শক্ত যা তাই সাধতে হবে, মাথা তুলে রইব ভবে-- সহজ পথে চলব ভেবে পড়ব না, পাঁকের 'পরে পড়ব না ॥ ধর্ম আমার মাথায় রেখে চলব সিধে রাস্তা দেখে-- বিপদ যদি এসে পড়ে সরব না, ঘরের কোণে সরব না ॥