এই শ্রাবণের বুকের ভিতর আগুন আছে। সেই আগুনের কালোরূপ যে আমার চোখের 'পরে নাচে॥ ও তার শিখার জটা ছড়িয়ে পড়ে দিক হতে ওই দিগন্তরে, তার কালো আভার কাঁপন দেখো তালবনের ওই গাছে গাছে॥ বাদল-হাওয়া পাগল হল সেই আগুনের হুহুঙ্কারে। দুন্দুভি তার বাজিয়ে বেড়ায় মাঠ হতে কোন্ মাঠের পারে। ওরে, সেই আগুনের পুলক ফুটে কদম্ববন রঙিয়ে উঠে, সেই আগুনের বেগ লাগে আজ আমার গানের পাখার পাছে॥
আকাশে দুই হাতে প্রেম বিলায় ও কে! সে সুধা ছড়িয়ে গেল লোকে লোকে ॥ গাছেরা ভরে নিল সবুজ পাতায়, ধরণী ধরে নিল আপন মাথায়। ছেলেরা সকল গায়ে নিল মেখে, পাখিরা পাখায় পাখায় নিল এঁকে। ছেলেরা কুড়িয়ে নিল মায়ের বুকে, মায়েরা দেখে নিল ছেলে মুখে ॥ সে যে ওই অশ্রুধারায় পড়ল গলে। সে যে ওই বিদীর্ণ বীর-হৃদয় হতে বহিল মরণরূপী জীবনস্রোতে। সে যে ওই ভাঙাগড়ার তালে তালে নেচে যায় দেশে দেশে কালে কালে ॥