নারীর ললিত লোভন লীলায় এখনি কেন এ ক্লান্তি। এখনি কি সখা, খেলা হল অবসান॥ যে মধুর রসে ছিলে বিহ্বল সে কি মধুমাখা ভ্রান্তি-- সে কি স্বপ্নের দান। সে কি সত্যের অপমান। দূর দুরাশায় হৃদয় ভরিছ, কঠিন প্রেমের প্রতিমা গড়িছ-- কী মনে ভাবিয়া নারীতে করিছ পৌরুষসন্ধান। এও কি মায়ার দান॥ সহসা মন্ত্রবলে নমনীয় এই কমনীয়তারে যদি আমাদের সখী একেবারে পরের বসন-সমান ছিন্ন করি ফেলে ধূলিতলে সবে না সবে না সে নৈরাশ্য-- ভাগ্যের সেই অট্টহাস্য জানি জানি সখা, ক্ষুব্ধ করিবে লুব্ধ পুরুষপ্রাণ-- হানিবে নিঠুর বাণ॥
কী করিলি মোহের ছলনে। গৃহ তেয়াগিয়া প্রবাসে ভ্রমিলি, পথ হারাইলি গহনে।। ওই সময় চলে গেল, আঁধার হয়ে এল, মেঘ ছাইল গগনে। শ্রান্ত দেহ আর চলিতে চাহে না, বিঁধিছে কন্টক চরণে।। গৃহে ফিরে যেতে প্রাণ কাঁদিছে, এখন ফিরিব কেমনে। ‘পথ বলে দাও’ ‘পথ বলে দাও’ কে জানে কারে ডাকি সঘনে।। বন্ধু যাহারা ছিল সকলে চলে গেল, কে আর রহিল এ বনে। ওরে, জগতসখা আছে যা রে তাঁর কাছে, বেলা যে যায় মিছে রোদনে।। দাঁড়ায়ে গৃহদ্বারে জননী ডাকিছে, আয় রে ধরি তাঁর চরণে। পথের ধূলি লেগে অন্ধ আঁখি মোর, মায়েরে দেখেও দেখিলি নে। কোথা গো কোথা তুমি জননী, কোথা তুমি, ডাকিছ কোথা হতে এ জনে। হাতে ধরিয়ে সাথে লয়ে চলো তোমার অমৃতভবনে।।