আমার গোধূলিলগন এল বুঝি কাছে গোধূলিলগন রে। বিবাহের রঙে রাঙা হয়ে আসে সোনার গগন রে। শেষ ক'রে দিল পাখি গান গাওয়া, নদীর উপরে পড়ে এল হাওয়া; ও পারের তীর, ভাঙা মন্দির আঁধারে মগন রে। আসিছে মধুর ঝিল্লিনূপুরে গোধূলিলগন রে ॥ আমার দিন কেটে গেছে কখনো খেলায়, কখনো কত কী কাজে। এখন কী শুনি পুরবীর সুরে কোন্ দূরে বাঁশি বাজে। বুঝি দেরি নাই, আসে বুঝি আসে, আলোকের আভা লেগেছে আকাশে-- বেলাশেষে মোরে কে সাজাবে, ওরে, নবমিলনের সাজে! সারা হল কাজ, মিছে কেন আজ ডাক মোরে আর কাজে ॥ আমি জানি যে আমার হয়ে গেছে গণা গোধূলিলগন রে। ধূসর আলোকে মুদিবে নয়ন অস্তগগন রে। তখন এ ঘরে কে খুলিবে দ্বার, কে লইবে টানি বাহুটি আমার, আমায় কে জানে কী মন্ত্রে গানে করিবে মগন রে-- সব গান সেরে আসিবে যখন গোধূলিলগন রে ॥
ওগো, তোমরা সবাই ভালো-- যার অদৃষ্টে যেমনি জুটেছে, সেই আমাদের ভালো-- আমাদের এই আঁধার ঘরে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বালো ॥ কেউ বা অতি জ্বলো-জ্বলো, কেউ বা ম্লান' ছলো-ছলো, কেউ বা কিছু দহন করে, কেউ বা স্নিগ্ধ আলো ॥ নূতন প্রেমে নূতন বধূ আগাগোড়া কেবল মধু, পুরাতনে অম্ল-মধুর একটুকু ঝাঁঝালো। বাক্য যখন বিদায় করে চক্ষু এসে পায়ে ধরে, রাগের সঙ্গে অনুরাগে সমান ভাগে ঢালো ॥ আমরা তৃষ্ঞা, তোমরা সুধা-- তোমরা তৃপ্তি, আমরা ক্ষুধা-- তোমার কথা বলতে কবির কথা ফুরালো। যে মূর্তি নয়নে জাগে সবই আমার ভালো লাগে-- কেউ বা দিব্যি গৌরবরন, কেউ বা দিব্যি কালো ॥