তোমাদের দান যশের ডালায় সব-শেষ সঞ্চয় আমার-- নিতে মনে লাগে ভয়॥ এই রূপলোকে কবে এসেছিনু রাতে, গেঁথেছিনু মালা ঝ'রে-পড়া পারিজাতে, আঁধারে অন্ধ-- এ যে গাঁথা তারি হাতে-- কী দিল এ পরিচয়॥ এরে পরাবে কি কলালক্ষ্মীর গলে সাতনরী হারে যেথায় মানিক জ্বলে। একদা কখন অমরার উৎসবে ম্লান ফুলদল খসিয়া পড়িবে কবে, এ আদর যদি লজ্জার পরাভবে সে দিন মলিন হয়॥
তোমারে জানি নে হে, তবু মন তোমাতে ধায়। তোমারে না জেনে বিশ্ব তবু তোমাতে বিরাম পায়।। অসীম সৌন্দর্য তব কে করেছে অনুভব হে, সে মাধুরী চিরনব– আমি না জেনে প্রাণ সঁপেছি তোমায়।। তুমি জ্যোতির জ্যোতি, আমি অন্ধ আঁধারে। তুমি মুক্ত মহীয়ান, আমি মগ্ন পাথারে। তুমি অন্তহীন, আমি ক্ষুদ্র দীন– কী অপূর্ব মিলন তোমায় আমায়।।
আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে তাই হেরি তায় সকল খানে॥ আছে সে নয়নতারায় আলোকধারায়, তাই না হারায়-- ওগো তাই দেখি তায় যেথায় সেথায় তাকাই আমি যে দিক-পানে॥ আমি তার মুখের কথা শুনব ব'লে গেলাম কোথা, শোনা হল না, হল না-- আজ ফিরে এসে নিজের দেশে এই-যে শুনি শুনি তাহার বাণী আপন গানে॥ কে তোরা খুঁজিস তারে কাঙাল-বেশে দ্বারে দ্বারে, দেখা মেলে না মেলে না,-- ও তোরা আয় রে ধেয়ে দেখ্ রে চেয়ে আমার বুকে -- ওরে দেখ্ রে আমার দুই নয়ানে॥