মধুর, তোমার শেষ যে না পাই প্রহর হল শেষ-- ভুবন জুড়ে রইল লেগে আনন্দ-আবেশ ॥ দিনান্তের এই এক কোনাতে সন্ধ্যামেঘের শেষ সোনাতে মন যে আমার গুঞ্জরিছে কোথায় নিরুদ্দেশ ॥ সায়ন্তনের ক্লান্ত ফুলের গন্ধ হাওয়ার 'পরে অঙ্গবিহীন আলিঙ্গনে সকল অঙ্গ ভরে। এই গোধুলির ধূসরিমায় শ্যামল ধরার সীমায় সীমায় শুনি বনে বনান্তরে অসীম গানের রেশ ॥
শেষ নাহি যে, শেষ কথা কে বলবে? আঘাত হয়ে দেখা দিল, আগুন হয়ে জ্বলবে ॥ সাঙ্গ হলে মেঘের পালা শুরু হবে বৃষ্টি-ঢালা, বরফ-জমা সারা হলে নদী হয়ে গলবে ॥ ফুরায় যা তা ফুরায় শুধু চোখে, অন্ধকারের পেরিয়ে দুয়ার যায় চলে আলোকে। পুরাতনের হৃদয় টুটে আপনি নূতন উঠবে ফুটে, জীবনে ফুল ফোটা হলে মরণে ফল ফলবে ॥
ও দেখা দিয়ে যে চলে গেল ও চুপিচুপি কী বলে গেল। যেতে যেতে গো, কাননেতে গো ও কত যে ফুলে দ'লে গেল॥ মনে মনে কী ভাবে কে জানে, মেতে আছে ও যেন কী গানে, নয়ন হানে আকাশ-পানে-- চাঁদের হিয়া গ'লে গেল॥ ও পায়ে পায়ে যে বাজায়ে চলে বীণার ধ্বনি তৃণের দলে। কে জানে কারে ভালো কি বাসে, বুঝিতে নারি কাঁদে কি হাসে, জানি নে ও কি ফিরিয়া আসে-- জানি নে ও কি ছ'লে গেল॥