45 (in this moment i see)
IN THIS moment I see you seated upon the morning's golden carpet.
The sun shines in your crown, the stars drop at your feet, the crowds come and bow to you and go, and the poet sits speechless in the corner.
Rendition
Related Topics
আবেদন
Verses
ভৃত্য। জয় হোক মহারানী। রাজরাজেশ্বরী,
দীন ভৃত্যে করো দয়া।
রানী। সভা ভঙ্গ করি
সকলেই গেল চলি যথাযোগ্য কাজে
আমার সেবকবৃন্দ বিশ্বরাজ্যমাঝে,
মোর আজ্ঞা মোর মান লয়ে শীর্ষদেশে
জয়শঙ্খ সগর্বে বাজায়ে। সভাশেষে
তুমি এলে নিশান্তের শশাঙ্ক-সমান
ভক্ত ভৃত্য মোর। কী প্রার্থনা?
ভৃত্য। মোর স্থান
সর্বশেষে, আমি তব সর্বাধম দাস
মহোত্তমে। একে একে পরিতৃপ্ত-আশ
সবাই আনন্দে যবে ঘরে ফিরে যায়
সেইক্ষণে আমি আসি নির্জন সভায়,
একাকী আসীনা তব চরণতলের
প্রান্তে বসে ভিক্ষা মাগি শুধু সকলের
সর্ব-অবশেষটুকু।
রানী। অবোধ ভিক্ষুক,
অসময়ে কী তোরে মিলিবে।
ভৃত্য। হাসিমুখ
দেখে চলে যাব। আছে দেবী, আরো আছে--
নানা কর্ম নানা পদ নিল তোর কাছে
নানা জনে; এক কর্ম কেহ চাহে নাই,
ভৃত্য-'পরে দয়া করে দেহো মোরে তাই--
আমি তব মালঞ্চের হব মালাকর।
রানী। মালাকর?
ভৃত্য। ক্ষুদ্র মালাকর। অবসর
লব সব কাজে। যুদ্ধ-অস্ত্র ধনুঃশর
ফেলিনু ভূতলে, এ উষ্ণীষ রাজসাজ
রাখিনু চরণে তব-- যত উচ্চকাজ
সব ফিরে লও দেবী। তব দূত করি
মোরে আর পাঠায়ো না, তব স্বর্ণতরী
দেশে দেশান্তরে লয়ে। জয়ধ্বজা তব
দিগ্দিগন্তে করিয়া প্রচার, নব নব
দিগ্বিজয়ে পাঠায়ো না মোরে। পরপারে
তব রাজ্য কর্মযশধনজনভারে
অসীমবিস্তৃত-- কত নগরনগরী,
কত লোকালয়, বন্দরেতে কত তরী,
বিপণিতে কত পণ্য-- ওই দেখো দূরে
মন্দিরশিখরে আর কত হর্ম্যচূড়ে
দিগন্তেরে করিছে দংশন, কলোচ্ছ্বাস
শ্বসিয়া উঠিছে শূন্যে করিবারে গ্রাস
নক্ষত্রের নিত্যনীরবতা। বহু ভৃত্য
আছে হোথা, বহু সৈন্য তব; জাগে নিত্য
কতই প্রহরী। এ পারে নির্জন তীরে
একাকী উঠেছে ঊর্ধ্বে উচ্চ গিরিশিরে
রঞ্জিত মেঘের মাঝে তুষারধবল
তোমার প্রাসাদসৌধ, অনিন্দ্যনির্মল
চন্দ্রকান্তমণিময়। বিজনে বিরলে
হেথা তব দক্ষিণের বাতায়নতলে
মঞ্জরিত-ইন্দুমল্লী-বল্লরীবিতানে,
ঘনচ্ছায়ে, নিভৃত কপোতকলগানে
একান্তে কাটিবে বেলা; স্ফটিকপ্রাঙ্গণে
জলযন্ত্রে উৎসধারা কল্লোলক্রন্দনে
উচ্ছ্বসিবে দীর্ঘদিন ছলছলছল--
মধ্যাহ্নেরে করি দিবে বেদনাবিহ্বল
করুণাকাতর। অদূরে অলিন্দ-'পরে
পুঞ্জ পুচ্ছ বিস্ফারিয়া স্ফীত গর্বভরে
নাচিবে ভবনশিখী, রাজহংসদল
চরিবে শৈবালবনে করি কোলাহল
বাঁকায়ে ধবল গ্রীবা, পাটলা হরিণী
ফিরিবে শ্যামল ছায়ে। অয়ি একাকিনী,
আমি তব মালঞ্চের হব মালাকর।
রানী। ওরে তুই কর্মভীরু অলস কিংকর,
কী কাজে লাগিবি?
ভৃত্য। অকাজের কাজ যত,
আলস্যের সহস্র সঞ্চয়। শত শত
আনন্দের আয়োজন। যে অরণ্যপথে
কর তুমি সঞ্চরণ বসন্তে শরতে
প্রত্যুষে অরুণোদয়ে, শ্লথ অঙ্গ হতে
তপ্ত নিদ্রালসখানি স্নিগ্ধ বায়ুস্রোতে
করি দিয়া বিসর্জন, সে বনবীথিকা
রাখিব নবীন করি। পুষ্পাক্ষরে লিখা
তব চরণের স্তুতি প্রত্যহ উষায়
বিকশি উঠিবে তব পরশতৃষায়
পুলকিত তৃণপুঞ্জতলে। সন্ধ্যাকালে
যে মঞ্জু মালিকাখানি জড়াইবে ভালে
কবরী বেষ্টন করি, আমি নিজ করে
রচি সে বিচিত্র মালা সান্ধ্য যূথীস্তরে,
সাজায়ে সুবর্ণ-পাত্রে তোমার সম্মুখে
নিঃশব্দে ধরিব আসি অবনতমুখে--
যেথায় নিভৃত কক্ষে ঘন কেশপাশ
তিমিরনির্ঝরসম উন্মুক্ত-উচ্ছ্বাস
তরঙ্গকুটিল এলাইয়া পৃষ্ঠ-'পরে,
কনকমুকুর অঙ্কে, শুভ্রপদ্মকরে
বিনাইবে বেণী। কুমুদসরসীকূলে
বসিবে যখন সপ্তপর্ণতরুমূলে
মালতী-দোলায়-- পত্রচ্ছেদ-অবকাশে
পড়িবে ললাটে চক্ষে বক্ষে বেশবাসে
কৌতূহলী চন্দ্রমার সহস্র চুম্বন,
আনন্দিত তনুখানি করিয়া বেষ্টন
উঠিবে বনের গন্ধ বাসনা-বিভোল
নিশ্বাসের প্রায়, মৃদু ছন্দে দিব দোল
মৃদুমন্দ সমীরের মতো। অনিমেষে
যে প্রদীপ জ্বলে তব শয্যাশিরোদেশে
সারা সুপ্তনিশি, সুরনরস্বপ্নাতীত
নিদ্রিত শ্রীঅঙ্গপানে স্থির অকম্পিত
নিদ্রাহীন আঁখি মেলি-- সে প্রদীপখানি
আমি জ্বালাইয়া দিব গন্ধতৈল আনি।
শেফালির বৃন্ত দিয়া রাঙাইব, রানী,
বসন বাসন্তী রঙে। পাদপীঠখানি
নব ভাবে নব রূপে শুভ-আলিম্পনে
প্রত্যহ রাখিব অঙ্কি কুঙ্কুমে চন্দনে
কল্পনার লেখা। নিকুঞ্জের অনুচর,
আমি তব মালঞ্চের হব মালাকর।
রানী। কী লইবে পুরস্কার।
ভৃত্য। প্রত্যহ প্রভাতে
ফুলের কঙ্কণ গড়ি কমলের পাতে
আনিব যখন, পদ্মের কলিকাসম
ক্ষুদ্র তব মুষ্টিখানি করে ধরি মম
আপনি পরায়ে দিব, এই পুরস্কার।
আশোকের কিশলয়ে গাঁথি দিব হার
প্রতি সন্ধ্যাবেলা, অশোকের রক্তকান্তে
চিত্রি পদতল চরণ-অঙ্গুলিপ্রান্তে
লেশমাত্র রেণু চুম্বিয়া মুছিয়া লব,
এই পুরস্কার।
রানী। ভৃত্য, আবেদন তব
করিনু গ্রহণ। আছে মোর বহু মন্ত্রী,
বহু সৈন্য, বহু সেনাপতি-- বহু যন্ত্রী
কর্মযন্ত্রে রত-- তুই থাক্ চিরদিন
স্বেচ্ছাবন্দী দাস, খ্যাতিহীন, কর্মহীন।
রাজসভা-বহিঃপ্রান্তে রবে তোর ঘর--
তুই মোর মালঞ্চের হবি মালাকর।
আরো দেখুন
দীন ভৃত্যে করো দয়া।
রানী। সভা ভঙ্গ করি
সকলেই গেল চলি যথাযোগ্য কাজে
আমার সেবকবৃন্দ বিশ্বরাজ্যমাঝে,
মোর আজ্ঞা মোর মান লয়ে শীর্ষদেশে
জয়শঙ্খ সগর্বে বাজায়ে। সভাশেষে
তুমি এলে নিশান্তের শশাঙ্ক-সমান
ভক্ত ভৃত্য মোর। কী প্রার্থনা?
ভৃত্য। মোর স্থান
সর্বশেষে, আমি তব সর্বাধম দাস
মহোত্তমে। একে একে পরিতৃপ্ত-আশ
সবাই আনন্দে যবে ঘরে ফিরে যায়
সেইক্ষণে আমি আসি নির্জন সভায়,
একাকী আসীনা তব চরণতলের
প্রান্তে বসে ভিক্ষা মাগি শুধু সকলের
সর্ব-অবশেষটুকু।
রানী। অবোধ ভিক্ষুক,
অসময়ে কী তোরে মিলিবে।
ভৃত্য। হাসিমুখ
দেখে চলে যাব। আছে দেবী, আরো আছে--
নানা কর্ম নানা পদ নিল তোর কাছে
নানা জনে; এক কর্ম কেহ চাহে নাই,
ভৃত্য-'পরে দয়া করে দেহো মোরে তাই--
আমি তব মালঞ্চের হব মালাকর।
রানী। মালাকর?
ভৃত্য। ক্ষুদ্র মালাকর। অবসর
লব সব কাজে। যুদ্ধ-অস্ত্র ধনুঃশর
ফেলিনু ভূতলে, এ উষ্ণীষ রাজসাজ
রাখিনু চরণে তব-- যত উচ্চকাজ
সব ফিরে লও দেবী। তব দূত করি
মোরে আর পাঠায়ো না, তব স্বর্ণতরী
দেশে দেশান্তরে লয়ে। জয়ধ্বজা তব
দিগ্দিগন্তে করিয়া প্রচার, নব নব
দিগ্বিজয়ে পাঠায়ো না মোরে। পরপারে
তব রাজ্য কর্মযশধনজনভারে
অসীমবিস্তৃত-- কত নগরনগরী,
কত লোকালয়, বন্দরেতে কত তরী,
বিপণিতে কত পণ্য-- ওই দেখো দূরে
মন্দিরশিখরে আর কত হর্ম্যচূড়ে
দিগন্তেরে করিছে দংশন, কলোচ্ছ্বাস
শ্বসিয়া উঠিছে শূন্যে করিবারে গ্রাস
নক্ষত্রের নিত্যনীরবতা। বহু ভৃত্য
আছে হোথা, বহু সৈন্য তব; জাগে নিত্য
কতই প্রহরী। এ পারে নির্জন তীরে
একাকী উঠেছে ঊর্ধ্বে উচ্চ গিরিশিরে
রঞ্জিত মেঘের মাঝে তুষারধবল
তোমার প্রাসাদসৌধ, অনিন্দ্যনির্মল
চন্দ্রকান্তমণিময়। বিজনে বিরলে
হেথা তব দক্ষিণের বাতায়নতলে
মঞ্জরিত-ইন্দুমল্লী-বল্লরীবিতানে,
ঘনচ্ছায়ে, নিভৃত কপোতকলগানে
একান্তে কাটিবে বেলা; স্ফটিকপ্রাঙ্গণে
জলযন্ত্রে উৎসধারা কল্লোলক্রন্দনে
উচ্ছ্বসিবে দীর্ঘদিন ছলছলছল--
মধ্যাহ্নেরে করি দিবে বেদনাবিহ্বল
করুণাকাতর। অদূরে অলিন্দ-'পরে
পুঞ্জ পুচ্ছ বিস্ফারিয়া স্ফীত গর্বভরে
নাচিবে ভবনশিখী, রাজহংসদল
চরিবে শৈবালবনে করি কোলাহল
বাঁকায়ে ধবল গ্রীবা, পাটলা হরিণী
ফিরিবে শ্যামল ছায়ে। অয়ি একাকিনী,
আমি তব মালঞ্চের হব মালাকর।
রানী। ওরে তুই কর্মভীরু অলস কিংকর,
কী কাজে লাগিবি?
ভৃত্য। অকাজের কাজ যত,
আলস্যের সহস্র সঞ্চয়। শত শত
আনন্দের আয়োজন। যে অরণ্যপথে
কর তুমি সঞ্চরণ বসন্তে শরতে
প্রত্যুষে অরুণোদয়ে, শ্লথ অঙ্গ হতে
তপ্ত নিদ্রালসখানি স্নিগ্ধ বায়ুস্রোতে
করি দিয়া বিসর্জন, সে বনবীথিকা
রাখিব নবীন করি। পুষ্পাক্ষরে লিখা
তব চরণের স্তুতি প্রত্যহ উষায়
বিকশি উঠিবে তব পরশতৃষায়
পুলকিত তৃণপুঞ্জতলে। সন্ধ্যাকালে
যে মঞ্জু মালিকাখানি জড়াইবে ভালে
কবরী বেষ্টন করি, আমি নিজ করে
রচি সে বিচিত্র মালা সান্ধ্য যূথীস্তরে,
সাজায়ে সুবর্ণ-পাত্রে তোমার সম্মুখে
নিঃশব্দে ধরিব আসি অবনতমুখে--
যেথায় নিভৃত কক্ষে ঘন কেশপাশ
তিমিরনির্ঝরসম উন্মুক্ত-উচ্ছ্বাস
তরঙ্গকুটিল এলাইয়া পৃষ্ঠ-'পরে,
কনকমুকুর অঙ্কে, শুভ্রপদ্মকরে
বিনাইবে বেণী। কুমুদসরসীকূলে
বসিবে যখন সপ্তপর্ণতরুমূলে
মালতী-দোলায়-- পত্রচ্ছেদ-অবকাশে
পড়িবে ললাটে চক্ষে বক্ষে বেশবাসে
কৌতূহলী চন্দ্রমার সহস্র চুম্বন,
আনন্দিত তনুখানি করিয়া বেষ্টন
উঠিবে বনের গন্ধ বাসনা-বিভোল
নিশ্বাসের প্রায়, মৃদু ছন্দে দিব দোল
মৃদুমন্দ সমীরের মতো। অনিমেষে
যে প্রদীপ জ্বলে তব শয্যাশিরোদেশে
সারা সুপ্তনিশি, সুরনরস্বপ্নাতীত
নিদ্রিত শ্রীঅঙ্গপানে স্থির অকম্পিত
নিদ্রাহীন আঁখি মেলি-- সে প্রদীপখানি
আমি জ্বালাইয়া দিব গন্ধতৈল আনি।
শেফালির বৃন্ত দিয়া রাঙাইব, রানী,
বসন বাসন্তী রঙে। পাদপীঠখানি
নব ভাবে নব রূপে শুভ-আলিম্পনে
প্রত্যহ রাখিব অঙ্কি কুঙ্কুমে চন্দনে
কল্পনার লেখা। নিকুঞ্জের অনুচর,
আমি তব মালঞ্চের হব মালাকর।
রানী। কী লইবে পুরস্কার।
ভৃত্য। প্রত্যহ প্রভাতে
ফুলের কঙ্কণ গড়ি কমলের পাতে
আনিব যখন, পদ্মের কলিকাসম
ক্ষুদ্র তব মুষ্টিখানি করে ধরি মম
আপনি পরায়ে দিব, এই পুরস্কার।
আশোকের কিশলয়ে গাঁথি দিব হার
প্রতি সন্ধ্যাবেলা, অশোকের রক্তকান্তে
চিত্রি পদতল চরণ-অঙ্গুলিপ্রান্তে
লেশমাত্র রেণু চুম্বিয়া মুছিয়া লব,
এই পুরস্কার।
রানী। ভৃত্য, আবেদন তব
করিনু গ্রহণ। আছে মোর বহু মন্ত্রী,
বহু সৈন্য, বহু সেনাপতি-- বহু যন্ত্রী
কর্মযন্ত্রে রত-- তুই থাক্ চিরদিন
স্বেচ্ছাবন্দী দাস, খ্যাতিহীন, কর্মহীন।
রাজসভা-বহিঃপ্রান্তে রবে তোর ঘর--
তুই মোর মালঞ্চের হবি মালাকর।
উৎসৃষ্ট
Verses
মিথ্যে তুমি গাঁথলে মালা
নবীন ফুলে,
ভেবেছ কি কণ্ঠে আমার
দেবে তুলে?
দাও তো ভালোই, কিন্তু জেনো
হে নির্মলে,
আমার মালা দিয়েছি ভাই
সবার গলে।
যে-ক'টা ফুল ছিল জমা
অর্ঘ্যে মম
উদ্দেশেতে সবায় দিনু--
নমো নমঃ।
কেউ বা তাঁরা আছেন কোথা
কেউ জানে না,
কারো বা মুখ ঘোমটা-আড়ে
আধেক চেনা।
কেউ বা ছিলেন অতীত কালে
অবন্তীতে,
এখন তাঁরা আছেন শুধু
কবির গীতে।
সবার তনু সাজিয়ে মাল্যে
পরিচ্ছদে
কহেন বিধি "তুভ্যমহং
সম্প্রদদে'।
হৃদয় নিয়ে আজ কি প্রিয়ে
হৃদয় দেবে?
হায় ললনা, সে প্রার্থনা
ব্যর্থ এবে।
কোথায় গেছে সেদিন আজি
যেদিন মম
তরুণ-কালে জীবন ছিল
মুকুলসম,
সকল শোভা সকল মধু
গন্ধ যত
বক্ষোমাঝে বন্ধ ছিল
বন্দীমত।
আজ যে তাহা ছড়িয়ে গেছে
অনেক দূরে--
অনেক দেশে, অনেক বেশে,
অনেক সুরে।
কুড়িয়ে তারে বাঁধতে পারে
একটিখানে
এমনতরো মোহন-মন্ত্র
কেই বা জানে!
নিজের মন তো দেবার আশা
চুকেই গেছে,
পরের মনটি পাবার আশায়
রইনু বেঁচে।
আরো দেখুন
নবীন ফুলে,
ভেবেছ কি কণ্ঠে আমার
দেবে তুলে?
দাও তো ভালোই, কিন্তু জেনো
হে নির্মলে,
আমার মালা দিয়েছি ভাই
সবার গলে।
যে-ক'টা ফুল ছিল জমা
অর্ঘ্যে মম
উদ্দেশেতে সবায় দিনু--
নমো নমঃ।
কেউ বা তাঁরা আছেন কোথা
কেউ জানে না,
কারো বা মুখ ঘোমটা-আড়ে
আধেক চেনা।
কেউ বা ছিলেন অতীত কালে
অবন্তীতে,
এখন তাঁরা আছেন শুধু
কবির গীতে।
সবার তনু সাজিয়ে মাল্যে
পরিচ্ছদে
কহেন বিধি "তুভ্যমহং
সম্প্রদদে'।
হৃদয় নিয়ে আজ কি প্রিয়ে
হৃদয় দেবে?
হায় ললনা, সে প্রার্থনা
ব্যর্থ এবে।
কোথায় গেছে সেদিন আজি
যেদিন মম
তরুণ-কালে জীবন ছিল
মুকুলসম,
সকল শোভা সকল মধু
গন্ধ যত
বক্ষোমাঝে বন্ধ ছিল
বন্দীমত।
আজ যে তাহা ছড়িয়ে গেছে
অনেক দূরে--
অনেক দেশে, অনেক বেশে,
অনেক সুরে।
কুড়িয়ে তারে বাঁধতে পারে
একটিখানে
এমনতরো মোহন-মন্ত্র
কেই বা জানে!
নিজের মন তো দেবার আশা
চুকেই গেছে,
পরের মনটি পাবার আশায়
রইনু বেঁচে।
নিষ্ঠুর সৃষ্টি
Verses
মনে হয় সৃষ্টি বুঝি বাঁধা নাই নিয়মনিগড়ে,
আনাগোনা মেলামেশা সবই অন্ধ দৈবের ঘটনা।
এই ভাঙে, এই গড়ে,
এই উঠে, এই পড়ে--
কেহ নাহি চেয়ে দেখে কার কোথা বাজিছে বেদনা।
মনে হয়, যেন ওই আবারিত শূন্যতলপথে
অকস্মাৎ আসিয়াছে সৃজনের বন্যা ভয়ানক--
অজ্ঞাত শিখর হতে
সহসা প্রচণ্ড স্রোতে
ছুটে আসে সূর্য চন্দ্র, ধেয়ে আসে লক্ষ কোটি লোক।
কোথাও পড়েছে আলো, কোথাও বা অন্ধকার নিশি,
কোথাও সফেন শুভ্র, কোথাও বা আবর্ত আবিল,
সৃজনে প্রলয়ে মিশি
আক্রমিছে দশ দিশি--
অনন্ত প্রশান্ত শূন্য তরঙ্গিয়া করিছে ফেনিল।
মোরা শুধু খড়কুটো স্রোতোমুখে চলিয়াছি ছুটি,
অর্ধ পলকের তরে কোথাও দাঁড়াতে নাহি ঠাঁই।
এই ডুবি, এই উঠি,
ঘুরে ঘুরে পড়ি লুটি--
এই যারা কাছে আসে এই তারা কাছাকাছি নাই।
সৃষ্টিস্রোত-কোলাহলে বিলাপ শুনিবে কে বা কার,
আপন গর্জনে বিশ্ব আপনারে করেছে বধির।
শতকোটি হাহাকার
কলধ্বনি রচে তার--
পিছু ফিরে চাহিবার কাল নাই, চলেছে অধীর।
হায় স্নেহ, হায় প্রেম, হায় তুই মানবহৃদয়,
খসিয়া পড়িলি কোন্ নন্দনের তটতরু হতে?
যার লাগি সদা ভয়,
পরশ নাহিক সয়,
কে তারে ভাসালে হেন জড়ময় সৃজনের স্রোতে?
তুমি কি শুনিছ বসি হে বিধাতা, হে অনাদি কবি,
ক্ষুদ্র এ মানবশিশু রচিতেছে প্রলাপজল্পনা?
সত্য আছে স্তব্ধ ছবি
যেমন উষার রবি,
নিম্নে তারি ভাঙে গড়ে মিথ্যা যত কুহককল্পনা।
আরো দেখুন
আনাগোনা মেলামেশা সবই অন্ধ দৈবের ঘটনা।
এই ভাঙে, এই গড়ে,
এই উঠে, এই পড়ে--
কেহ নাহি চেয়ে দেখে কার কোথা বাজিছে বেদনা।
মনে হয়, যেন ওই আবারিত শূন্যতলপথে
অকস্মাৎ আসিয়াছে সৃজনের বন্যা ভয়ানক--
অজ্ঞাত শিখর হতে
সহসা প্রচণ্ড স্রোতে
ছুটে আসে সূর্য চন্দ্র, ধেয়ে আসে লক্ষ কোটি লোক।
কোথাও পড়েছে আলো, কোথাও বা অন্ধকার নিশি,
কোথাও সফেন শুভ্র, কোথাও বা আবর্ত আবিল,
সৃজনে প্রলয়ে মিশি
আক্রমিছে দশ দিশি--
অনন্ত প্রশান্ত শূন্য তরঙ্গিয়া করিছে ফেনিল।
মোরা শুধু খড়কুটো স্রোতোমুখে চলিয়াছি ছুটি,
অর্ধ পলকের তরে কোথাও দাঁড়াতে নাহি ঠাঁই।
এই ডুবি, এই উঠি,
ঘুরে ঘুরে পড়ি লুটি--
এই যারা কাছে আসে এই তারা কাছাকাছি নাই।
সৃষ্টিস্রোত-কোলাহলে বিলাপ শুনিবে কে বা কার,
আপন গর্জনে বিশ্ব আপনারে করেছে বধির।
শতকোটি হাহাকার
কলধ্বনি রচে তার--
পিছু ফিরে চাহিবার কাল নাই, চলেছে অধীর।
হায় স্নেহ, হায় প্রেম, হায় তুই মানবহৃদয়,
খসিয়া পড়িলি কোন্ নন্দনের তটতরু হতে?
যার লাগি সদা ভয়,
পরশ নাহিক সয়,
কে তারে ভাসালে হেন জড়ময় সৃজনের স্রোতে?
তুমি কি শুনিছ বসি হে বিধাতা, হে অনাদি কবি,
ক্ষুদ্র এ মানবশিশু রচিতেছে প্রলাপজল্পনা?
সত্য আছে স্তব্ধ ছবি
যেমন উষার রবি,
নিম্নে তারি ভাঙে গড়ে মিথ্যা যত কুহককল্পনা।