গোধূলি নিঃশব্দে আসি আপন অঞ্চলে ঢাকে যথা কর্মক্লান্ত সংসারের যত ক্ষত, যত মলিনতা, ভগ্নভবনের দৈন্য, ছিন্নবসনের লজ্জা যত-- তব লাগি স্তব্ধ শোক স্নিগ্ধ দুই হাতে সেইমতো প্রসারিত করে দিক অবারিত উদার তিমির আমার এ জীবনের বহু ক্ষুব্ধ দিনযামিনীর স্খলন খণ্ডতা ক্ষতি ভগ্নদীর্ণ জীর্ণতার 'পরে- সব ভালো-মন্দ নিয়ে মোর প্রাণ দিক এক ক'রে বিষাদের একখানি স্বর্ণময় বিশাল বেষ্টনে। আজ কোনো আকাঙক্ষার কোনো ক্ষোভ নাহি থাক মনে, অতীত অতৃপ্তি-পানে যেন নাহি চাই ফিরে ফিরে-- যাহা-কিছু গেছে যাক, আমি চলে যাই ধীরে ধীরে তোমার মিলনদীপ অকম্পিত যেথায় বিরাজে ত্রিভুবনদেবতার ক্লান্তিহীন আনন্দের মাঝে।
ভৈরবী যামিনী না যেতে জাগালে না কেন, বেলা হল মরি লাজে। শরমে জড়িত চরণে কেমনে চলিব পথের মাঝে! আলোকপরশে মরমে মরিয়া হেরো গো শেফালি পড়িছে ঝরিয়া, কোনোমতে আছে পরান ধরিয়া কামিনী শিথিল সাজে। যামিনী না যেতে জাগালে না কেন, বেলা হল মরি লাজে। নিবিয়া বাঁচিল নিশার প্রদীপ উষার বাতাস লাগি। রজনীর শশী গগনের কোণে লুকায় শরণ মাগি। পাখি ডাকি বলে "গেল বিভাবরী, বধূ চলে জলে লইয়া গাগরি, আমি এ আকুল কবরী আবরি কেমনে যাইব কাজে! যামিনী না যেতে জাগালে না কেন, বেলা হল মরি লাজে।