গান মনে হল যেন পেরিয়ে এলেম অন্তবিহীন পথ আসিতে তোমার দ্বারে, মরুতীর হতে সুধাশ্যামলিম পারে। পথ হতে আমি গাঁথিয়া এনেছি সিক্ত যূথীর মালা সকরুণ নিবেদনের গন্ধ-ঢালা, লজ্জা দিয়ো না তারে। সজল মেঘের ছায়া ঘনাইছে বনে বনে, পথ-হারানোর বাজিছে বেদনা সমীরণে। দূর হতে আমি দেখেছি তোমার ওই বাতায়নতলে নিভৃতে প্রদীপ জ্বলে-- আমার এ আঁখি উৎসুক পাখি ঝড়ের অন্ধকারে।
চলেছিলে পাড়ার পথে কলস লয়ে কাঁখে, একটুখানি ফিরে কেন দেখলে ঘোমটা-ফাঁকে? ওইটুকু যে চাওয়া দিল একটু হাওয়া কোথা তোমার ও পার থেকে আমার এ পার-'পরে। অতি দূরের দেখাদেখি অতি ক্ষণেক-তরে। আমি শুধু দেখেছিলেম তোমার দুটি আঁখি-- ঘোমটা-ফাঁদা আঁধার-মাঝে ত্রস্ত দুটি পাখি। তুমি এক নিমিখে চেয়ে আমার দিকে পথের একটি পথিকেরে দেখলে কতখানি একটুমাত্র কৌতূহলে একটি দৃষ্টি হানি? যেমন ঢাকা ছিলে তুমি তেমনি রইলে ঢাকা, তোমার কাছে যেমন ছিনু তেমনি রইনু ফাঁকা! তবে কিসের তরে থামলে লীলাভরে যেতে যেতে পাড়ার পথে কলস লয়ে কাঁখে? একটুখানি ফিরে কেন দেখলে ঘোমটা-ফাঁকে?