লীলাময়ী নলিনী, চপলিনী নলিনী, শুধালে আদর করে ভালো সে কি বাসে মোরে, কচি দুটি হাত দিয়ে ধরে গলা জড়াইয়ে, হেসে হেসে একেবারে ঢলে পড়ে পাগলিনী! ভালো বাসে কি না, তবু বলিতে চাহে না কভু নিরদয়া নলিনী! যবে হৃদি তার কাছে, প্রেমের নিশ্বাস যাচে চায় সে এমন করে বিপাকে ফেলিতে মোরে, হাসে কত, কথা তবু কয় না! এমন নির্দোষ ধূর্ত চতুর সরল, ঘোমটা তুলিয়া চায় চাহনি চপল উজল অসিত-তারা-নয়না! অমনি চকিত এক হাসির ছটায় ললিত কপোলে তার গোলাপ ফুটায়, তখনি পলায় আর রয় না!
পরম আত্মীয় বলে যারে মনে মানি তারে আমি কতদিন কতটুকু জানি! অসীম কালের মাঝে তিলেক মিলনে পরশে জীবন তার আমার জীবনে। যতটুকু লেশমাত্র চিনি দুজনায়, তাহার অনন্তগুণ চিনি নাকো হায়। দুজনের এক জন এক দিন যবে বারেক ফিরাবে মুখ, এ নিখিল ভবে আর কভু ফিরিবে না মুখোমুখি পথে, কে কার পাইবে সাড়া অনন্ত জগতে! এ ক্ষণমিলনে তবে, ওগো মনোহর, তোমারে হেরিনু কেন এমন সুন্দর! মুহূর্ত-আলোক কেন, হে অন্তরতম, তোমারে চিনিনু চিরপরিচিত মম?