ওগো তরুণী, ছিল অনেক দিনের পুরানো বছরে এমনি একখানি নতুন কাল, দক্ষিণ হাওয়ায় দোলায়িত, সেই কালেরই আমি । মুছে-আসা ঝাপসা পথ বেয়ে এসে পড়েছি বনগন্ধের সংকেতে তোমাদের এই আজকে-দিনের নতুন কালে । পারো যদি মেনে নিয়ো আমায় সখা বলে । আর কিছু নয়,আমি গান জোগাতে পারি তোমাদের মিলনরাতে আমার সেই নিদ্রাহারা সুদূর রাতের গান; তার সুরে পাবে দুরের নতুনকে, তোমার লাগবে ভালো, পাবে আপনাকেই আপনার সীমানার অতীত পারে । সেদিনকার বসন্তের বাঁশিতে লেগেছিল যে প্রিয়বন্দনার তান আজ সঙ্গে এনেছি তাই, সে নিয়ো তোমার অর্ধনিমীলিত চোখের পাতায়, তোমার দীর্ঘনিশ্বাসে । আমার বিস্মৃত বেদনার আভাসটুকু ঝরা ফুলের মৃদু গন্ধের মতো রেখে দিয়ে যাব তোমার নববসন্তের হাওয়ায়। সেদিনকার ব্যথা অকারণে বাজবে তোমার বুকে; মনে বুঝবে, সেদিন তুমি ছিলে না তবু ছিলে, নিখিল যৌবনের রঙ্গভূমির নেপথ্যে যবনিকার ও পারে । ওগো চিরন্তনী, আজ আমার বাঁশি তোমাকে বলতে এল-- যখন তুমি থাকবে না তখনো তুমি থাকবে আমার গানে । ডাকতে এলেম আমার হারিয়ে-যাওয়া পুরোনোকে তার খুঁজে-পাওয়া নতুন নামে । হে তরুণী, আমাকে মেনে নিয়ো তোমার সখা বলে, তোমার অন্যযুগের সখা ।
হে ভুবন আমি যতক্ষণ তোমারে না বেসেছিনু ভালো ততক্ষণ তব আলো খুঁজে খুঁজে পায় নাই তার সব ধন। ততক্ষণ নিখিল গগন হাতে নিয়ে দীপ তার শূন্যে শূন্যে ছিল পথ চেয়ে। মোর প্রেম এল গান গেয়ে; কী যে হল কানাকানি দিল সে তোমার গলে আপন গলার মালাখানি। মুগ্ধচক্ষে হেসে তোমারে সে গোপনে দিয়েছে কিছু যা তোমার গোপন হৃদয়ে তারার মালার মাঝে চিরদিন রবে গাঁথা হয়ে।