বহুরে যা এক করে, বিচিত্রেরে করে যা সরস, প্রভূতেরে করি আনে নিজ ক্ষুদ্র তর্জনীর বশ, বিবিধপ্রয়াসক্ষুব্ধ দিবসেরে লয়ে আসে ধীরে সুপ্তিসুনিবিড় শান্ত স্বর্ণময় সন্ধ্যার তিমিরে ধ্রুবতারাদীপদীপ্ত সুতৃপ্ত নিভৃত অবসানে, বহুবাক্যব্যাকুলতা ডুবায় যা একখানি গানে বেদনার সুধারসে-সে প্রেম হতে মোরে, প্রিয়া, রেখো না বঞ্চিত করি; প্রতিদিন থাকিয়ো জাগিয়া; আমার দিনান্ত-মাঝে কঙ্কণের কনককিরণ নিদ্রার আঁধারপটে আঁকি দিবে সোনার স্বপন; তোমার চরণপাত মোর স্তব্ধ সায়াহ্ন-আকাশে নিঃশব্দে পড়িবে ধরা আরক্তিম অলক্ত-আভাসে; এ জীবন নিয়ে যাবে অনিমেষ নয়নের টানে তোমার আপন কক্ষে পরিপূর্ণ মরণের পানে।
যা দিয়েছ আমার এ প্রাণ ভরি খেদ রবে না এখন যদি মরি। রজনীদিন কত দুঃখে সুখে কত যে সুর বেজেছে এই বুকে, কত বেশে আমার ঘরে ঢুকে কত রূপে নিয়েছ মন হরি, খেদ রবে না এখন যদি মরি। জানি তোমায় নিই নি প্রাণে বরি, পাই নি আমার সকল পূর্ণ কবে। যা পেয়েছি ভাগ্য বলে মানি, দিয়েছ তো তব পরশখানি, আছ তুমি এই জানা তো জানি-- যাব ধরি সেই ভরসার তরী। খেদ রবে না এখন যদি মরি।