আবার যদি ইচ্ছা কর আবার আসি ফিরে দুঃখসুখের-ঢেউ-খেলানো এই সাগরের তীরে। আবার জলে ভাসাই ভেলা, ধুলার 'পরে করি খেলা, হাসির মায়ামৃগীর পিছে ভাসি নয়ন-নীরে। কাঁটার পথে আঁধার রাতে আবার যাত্রা করি-- আঘাত খেয়ে বাঁচি কিম্বা আঘাত খেয়ে মরি। আবার তুমি ছদ্মবেশে আমার সাথে খেলাও হেসে, নূতন প্রেমে ভালোবাসি আবার ধরণীরে।
গোধূলিতে নামল আঁধার, ফুরিয়ে গেল বেলা, ঘরের মাঝে সাঙ্গ হল চেনা মুখের মেলা। দূরে তাকায় লক্ষ্যহারা নয়ন ছলোছলো, এবার তবে ঘরের প্রদীপ বাইরে নিয়ে চলো। মিলনরাতে সাক্ষী ছিল যারা আজো জ্বলে আকাশে সেই তারা। পাণ্ডু-আঁধার বিদায়রাতের শেষে যে তাকাত শিশিরসজল শূন্যতা-উদ্দেশে সেই তারকাই তেমনি চেয়েই আছে অস্তলোকের প্রান্তদ্বারের কাছে। অকারণে তাই এ প্রদীপ জ্বালাই আকাশ-পানে-- যেখান হতে স্বপ্ন নামে প্রাণে।
তোমার খোলা হাওয়া লাগিয়ে পালে টুকরো ক'রে কাছি ডুবতে রাজি আছি আমি ডুবতে রাজি আছি। সকাল আমার গেল মিছে, বিকেল যে যায় তারি পিছে; রেখো না আর, বেঁধো না আর কূলের কাছাকাছি। মাঝির লাগি আছি জাগি সকল রাত্রিবেলা, ঢেউগুলো যে আমায় নিয়ে করে কেবল খেলা। ঝড়কে আমি করব মিতে, ডরব না তার ভ্রূকুটিতে; দাও ছেড়ে দাও ওগো, আমি তুফান পেলে বাঁচি।