তোমার প্রেম যে বইতে পারি এমন সাধ্য নাই। এ সংসারে তোমার আমার মাঝখানেতে তাই কৃপা করে রেখেছ নাথ অনেক ব্যবধান-- দুঃখসুখের অনেক বেড়া ধনজনমান। আড়াল থেকে ক্ষণে ক্ষণে আভাসে দাও দেখা-- কালো মেঘের ফাঁকে ফাঁকে রবির মৃদু রেখা। শক্তি যারে দাও বহিতে অসীম প্রেমের ভার একেবারে সকল পর্দা ঘুচায়ে দাও তার। না রাখ তার ঘরের আড়াল না রাখ তার ধন, পথে এনে নিঃশেষে তায় কর অকিঞ্চন। না থাকে তার মান অপমান, লজ্জা শরম ভয়, একলা তুমি সমস্ত তার বিশ্বভুবনময়। এমন করে মুখোমুখি সামনে তোমার থাকা, কেবলমাত্র তোমাতে প্রাণ পূর্ণ করে রাখা, এ দয়া যে পেয়েছে তার লোভের সীমা নাই-- সকল লোভে সে সরিয়ে ফেলে তোমায় দিতে ঠাঁই।
মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই। এই সূর্যকরে এই পুষ্পিত কাননে জীবন্ত হৃদয়-মাঝে যদি স্থান পাই। ধরায় প্রাণের খেলা চিরতরঙ্গিত, বিরহ মিলন কত হাসি- অশ্রু-ময়, মানবের সুখে দুঃখে গাঁথিয়া সংগীত যদি গো রচিতে পারি অমর-আলয়। তা যদি না পারি তবে বাঁচি যত কাল তোমাদেরি মাঝখানে লভি যেন ঠাঁই, তোমরা তুলিবে বলে সকাল বিকাল নব নব সংগীতের কুসুম ফুটাই। হাসিমুখে নিয়ো ফুল, তার পরে হায় ফেলে দিয়ো ফুল, যদি সে ফুল শুকায়।