তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি বিচিত্র ছলনাজালে, হে ছলনাময়ী। মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদ পেতেছ নিপুণ হাতে সরল জীবনে। এই প্রবঞ্চনা দিয়ে মহত্ত্বেরে করেছ চিহ্নিত; তার তরে রাখ নি গোপন রাত্রি। তোমার জ্যোতিষ্ক তা'রে যে-পথ দেখায় সে যে তার অন্তরের পথ, সে যে চিরস্বচ্ছ, সহজ বিশ্বাসে সে যে করে তা'রে চিরসমুজ্জল। বাহিরে কুটিল হোক অন্তরে সে ঋজু, এই নিয়ে তাহার গৌরব। লোকে তা'রে বলে বিড়ম্বিত। সত্যেরে সে পায় আপন আলোকে ধৌত অন্তরে অন্তরে। কিছুতে পারে না তা'রে প্রবঞ্চিতে, শেষ পুরস্কার নিয়ে যায় সে যে আপন ভান্ডারে। অনায়াসে যে পেরেছে ছলনা সহিতে সে পায় তোমার হাতে শান্তির অক্ষয় অধিকার।
ভৈরবী যামিনী না যেতে জাগালে না কেন, বেলা হল মরি লাজে। শরমে জড়িত চরণে কেমনে চলিব পথের মাঝে! আলোকপরশে মরমে মরিয়া হেরো গো শেফালি পড়িছে ঝরিয়া, কোনোমতে আছে পরান ধরিয়া কামিনী শিথিল সাজে। যামিনী না যেতে জাগালে না কেন, বেলা হল মরি লাজে। নিবিয়া বাঁচিল নিশার প্রদীপ উষার বাতাস লাগি। রজনীর শশী গগনের কোণে লুকায় শরণ মাগি। পাখি ডাকি বলে "গেল বিভাবরী, বধূ চলে জলে লইয়া গাগরি, আমি এ আকুল কবরী আবরি কেমনে যাইব কাজে! যামিনী না যেতে জাগালে না কেন, বেলা হল মরি লাজে।