অধিক কিছু নেই গো কিছু নেই, কিছু নেই-- যা আছে তা এই গো শুধু এই, শুধু এই। যা ছিল তা শেষ করেছি একটি বসন্তেই। আজ যা কিছু বাকি আছে সামান্য এই দান-- তাই নিয়ে কি রচি দিব একটি ছোটো গান? একটি ছোটো মালা তোমার হাতের হবে বালা। একটি ছোটো ফুল তোমার কানের হবে দুল। একটি তরুলতায় ব'সে একটি ছোটো খেলায় হারিয়ে দিয়ে যাবে মোরে একটি সন্ধেবেলায়। অধিক কিছু নেই গো কিছু নেই, কিছু নেই। যা আছে তা এই গো শুধু এই, শুধু এই। ঘাটে আমি একলা বসে রই, ওগো আয়! বর্ষানদী পার হবি কি ওই-- হায় গো হায়! অকূল-মাঝে ভাসবি কে গো ভেলার ভরসায়। আমার তরীখান সইবে না তুফান; তবু যদি লীলাভরে চরণ কর দান, শান্ত তীরে তীরে তোমায় বাইব ধীরে ধীরে। একটি কুমুদ তুলে তোমার পরিয়ে দেব চুলে। ভেসে ভেসে শুনবে বসে কত কোকিল ডাকে কূলে কূলে কুঞ্জবনে নীপের শাখে শাখে। ক্ষুদ্র আমার তরীখানি-- সত্য করি কই, হায় গো পথিক, হায়, তোমায় নিয়ে একলা নায়ে পার হব না ওই আকুল যমুনায়।
"সাত-আটটে সাতাশ," আমি বলেছিলাম বলে গুরুমশায় আমার 'পরে উঠল রাগে জ্বলে। মা গো, তুমি পাঁচ পয়সায় এবার রথের দিনে সেই যে রঙিন পুতুলখানি আপনি দিলে কিনে খাতার নিচে ছিল ঢাকা; দেখালে এক ছেলে, গুরুমশায় রেগেমেগে ভেঙে দিলেন ফেলে। বল্লেন, "তোর দিনরাত্তির কেবল যত খেলা। একটুও তোর মন বসে না পড়াশুনার বেলা!" মা গো, আমি জানাই কাকে? ওঁর কি গুরু আছে? আমি যদি নালিশ করি এক্খনি তাঁর কাছে? কোনোরকম খেলার পুতুল নেই কি, মা, ওঁর ঘরে সত্যি কি ওঁর একটুও মন নেই পুতুলের 'পরে? সকালসাঁজে তাদের নিয়ে করতে গিয়ে খেলা কোনো পড়ায় করেন নি কি কোনোরকম হেলা? ওঁর যদি সেই পুতুল নিয়ে ভাঙেন কেহ রাগে, বল দেখি, মা, ওঁর মনে তা কেমনতরো লাগে?